Apan Desh | আপন দেশ

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ‘মেয়েকে হত্যা’, বাবা গ্রেফতার

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৪:৫৮, ১২ মে ২০২৫

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ‘মেয়েকে হত্যা’, বাবা গ্রেফতার

ছবি: আপন দেশ

জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজ মেয়েকে হত্যা করেছেন এক পিতা—এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের কাগজিপাড়া গ্রামে।

রোববার (১১ মে) স্কুলছাত্রী জান্নাতির বাবা জাহেদুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে জান্নাতির মা মোর্শেদা বেগম ও চাচি কহিনুর বেগমকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

গত শনিবার (১০ মে) সকালে বাড়ির পাশের কৃষিজমি থেকে জান্নাতির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহের মাথায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল।প্রথমে নিহতের জ্যাঠা খলিল অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন ও দাবি করেন, ‘প্রতিপক্ষের লোকজন রাতের আঁধারে জান্নাতিকে তুলে নিয়ে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।’

আরও পড়ুন>>>ব্রহ্মপুত্রে ভেসে উঠলো নিখোঁজ দুই ভাইয়ের মরদেহ

তবে স্থানীয়দের সন্দেহ ছিল পরিবারেই রয়েছে হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য। পরে তদন্তে পুলিশের ধারণা মেলে—এটি ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি মো. হাবিবুল্লাহ জানান, গ্রেফতারকৃত জাহেদুল হত্যাকাণ্ডে নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জান্নাতির বাবা জাহেদুল ও জ্যাঠা খলিলের সঙ্গে মকবুল পাটোয়ারি গোষ্ঠীর জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এ ছাড়া তাদের আপন ছোট ভাই রফিকুল ইসলামের সঙ্গেও জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে।

রফিকুল ও তার স্ত্রী হালি বেগম বলেন, জাহেদুল ও খলিল একাধিকবার তাদের মারধর করেছেন। এমনকি তাদের হত্যার হুমকিও দিয়েছেন। হালি বেগম বলেন, স্বামীর আপন ভাইয়েরা পিটিয়ে আমার হাত-পা ভেঙে দেয়। বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হই। ওরা বলতো, আমাগো মারি ফেলে গোষ্ঠিক ফাঁসামু।

রফিকুল অভিযোগ করেন, ওরা নিজের মেয়েকও মাইরা ফেলছে—এটাই বাস্তব। আমাগো মারলে প্রতিবেশীরা সন্দেহ করত, তাই মেয়েক খুন কইরা গোষ্ঠি ফাঁসানোর ছক করেছিল।

গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে জান্নাতির চাচা খলিল পলাতক রয়েছেন। তার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, হত্যাকাণ্ডে খলিলের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছিল।
তারা আরও জানান, খলিলের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রুহুল আমিন (উকিল) ও আব্দুল কাদের নামে দুই প্রতিবেশী এ হত্যায় পরামর্শক হিসেবে যুক্ত ছিলেন কিনা, তা তদন্ত হওয়া দরকার।

ওসি হাবিবুল্লাহ বলেন, হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকায় জাহেদুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার দেয়া তথ্যে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। তদন্তে আরও কারও সম্পৃক্ততা থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়