
ফাইল ছবি
পতন থেকে বের হয়ে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে দেশের শেয়ারবাজারে। প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম। ফলে আগে থেকেই বড় লোকসানের মধ্যে থাকা বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পরিমাণ কিছুটা হলেও কমে এসেছে।
তবে দীর্ঘদিনের দরপতনের ফলে বিনিয়োগকারীরা যে পরিমাণ লোকসানের মধ্যে পতিত হয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ের উত্থানে সে লোকসানের খুবই সামান্য অংশই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। অনেক বিনিয়োগকারী এখনো ৫০ শতাংশের ওপরে লোকসানে রয়েছেন।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ও অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। মূল্যসূচকের এ বড় উত্থানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানিগুলো।
ডিএসইতে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে একটি সূচক তৈরি হয়েছে। এ ৩০ কোম্পানির প্রায় সবকটির শেয়ার দাম বেড়েছে। এ কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন যেমন বেশি, তেমনই সূচকেও এগুলো বড় প্রভাব বিস্তার করে।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। তবে প্রথম দুই ঘণ্টার লেনদেনে বাজারে বেশ অস্থিরতা দেখা যায়। এ দাম বাড়ছে তো পরক্ষণেই দাম কমছে, বারবার এমন ঘটনা ঘটতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে দাম বাড়ার ধারা ধরে রাখে বাছাই করা কোম্পানিগুলো। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে অন্য খাতের ওপরও। এতে দাম বাড়ার তালিকা বড় হওয়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৭৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫১টির। আর ৬৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অন্যদিকে বাছাই করা ৩০টি কোম্পানির মধ্যে ২৭টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৩টির শেয়ার দাম কমেছে ও ৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিকে ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১০২টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৭৭টির দাম কমেছে এবং ৩৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৪০টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৩০টির দাম কমেছে এবং ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পঁচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৩১টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৪টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১০টির দাম কমেছে ও ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫০ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ২৭০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৬১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩৩ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৩০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭২২ কোটি ২৯ টাকার। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮৬০ কোটি ৭০ টাকার। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১৩৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। কোম্পানিটির ২৯ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিটি ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৭৯ লাখ টাকার। ১৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, ব্র্যাক ব্যাংক, বেক্সিমকো ফার্মা, ইস্টার্ন ব্যাংক ও সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৮১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২৩২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১০টির ও ৩৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।