
ছবি: বাফুফে
মায়ানমারে ইতিহাস গড়ে এশিয়ান কাপের মূল পর্বে পা রেখেছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। এ মুহুর্তে উজ্জীবিত লাল সবুজের মেয়েরা। প্রথমবার এশিয়ার মঞ্চে উঠার গর্ব নিয়ে এবার দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের লড়াইয়ে নামছে আফঈদারা। শুক্রবার (১১ জুলাই) বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হচ্ছে পিটার বাটলারের শিষ্যরা।
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে চার দলের এ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশকেই ফেভারিট মানছে প্রতিপক্ষ। তবে অতীতের এ সাফল্যগুলোর জন্য নয়, নারী ফুটবলে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের উত্থানেই আসরের অন্য দলগুলো স্বাগতিক বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখছে অনেকটা। ২০২২ ও ২০২৪ সালে সিনিয়র সাফে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ।
গত সপ্তাহে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ ফিরেছে এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বের টিকিট কেটে। সাফল্য ছোঁয়া সে দলের সাতজন ফুটবলার খেলছেন এ বয়সভিত্তিক আসরে। তাই সব দিক থেকে এগিয়ে বাংলাদেশ আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু করবে অভিযান।
এ আসরে ভারত না থাকলেও আছে এ সময়ে সাফ ঘরানায় বড় প্রতিপক্ষ নেপাল। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের বড় বাধাও পাহাড়ঘেরা দেশটির মেয়েরা। যদিও নেপাল এখানে এসেছে সিনিয়র দলের কোনো খেলোয়াড় ছাড়া। তারপরও ডাবল লিগ পদ্ধতির এ আসরের শিরোপা জিততে হলে পিটার বাটলার বাহিনীকে উতরে যেতে হবে নেপাল বাধা।
মিয়ানমারে এশিয়ান কাপ বাছাই খেলে আসার পর খুব কম সময় বাটলার পেয়েছেন দলটিকে প্রস্তুত করার। যদিও অনেক দিন ধরেই এ দলের মেয়েরা আছেন তার অধীনে। তাই সময় কম পেলেও ভালো প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। কোচ বাটলার বলেন, সত্যি বলতে কিছুটা তড়িঘড়ি করে প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। চারটি টুর্নামেন্ট লক্ষ্য করে আমাদের আসলে একসঙ্গে প্রোগ্রামগুলো চালাতে হচ্ছে। মিয়ানমার থেকে ফেরার পর থেকে আমরা মূলত খেলোয়াড়দের বাস্তবে ফেরাতে এবং বিনয়ী করে তুলতে কাজ করেছি। আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো শৃঙ্খলার মধ্যে থেকে টুর্নামেন্টের প্রতি মনোযোগ দিচ্ছি।
এটাকে নতুনদের সুযোগের মঞ্চ হিসেবে নিয়েছেন বাটলার, আমার চোখে খেলোয়াড় গড়ে তোলার জন্য এটি দারুণ মঞ্চ, তরুণ খেলোয়াড়দের জাত চেনার দারুণ এক সুযোগ। তাই আমি মুখিয়ে আছি তারা কী করতে পারে এটা দেখতে। অবশ্যই আমরা কাউকে হালকাভাবে নিচ্ছি না, সবাইকে সম্মান করছি। জানি সহজ হবে না।
ভারত না থাকায় আসরের আবেদন কমেছে জানিয়ে বাটলার বলেন, ‘অবশ্যই, ভারত অংশ না নেওয়ায় টুর্নামেন্টের ঔজ্জ্বল্য কিছুটা কমে গেছে। কিন্তু কিছু করার নেই। তবে যেমন আমি বলেছি, সব দলের জন্য খেলোয়াড় গড়ে তোলার গুরুত্বপূর্ণ একটি টুর্নামেন্ট।’
শুরুতেই শক্তিশালী বাংলাদেশের মুখোমুখি হতে যাওয়া শ্রীলঙ্কার কোচ সিরান্থা কুমারা এ আসরকে অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ হিসেবে দেখছেন। খুব বেশিদিনের প্রস্তুতির সুযোগ পায়নি তার দল। তারপরও বাংলাদেশের কাজকে যতটা সম্ভব কঠিন করে তোলার কথা বলেছেন তিনি, অল্প সময়ের প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। সব দলই ভালো। বাংলাদেশ বেশ শক্তিশালী। অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য এসেছি। বেশিরভাগ খেলোয়াড় অনূর্ধ্ব-১৮ বছরের। বাংলাদেশের সঙ্গে প্রথম ম্যাচ। স্বাগতিকরা শক্তিশালী। তবে আমরা ভালো একটা পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামব এবং চেষ্টা করব ভালো ফুটবল উপহার দিতে।
অঘটনের ইঙ্গিতও তিনি দিয়েছেন, সর্বশেষ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও সৌদি আরব ম্যাচের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে। আমরা সে রকম কিছুই চেষ্টা করব বাংলাদেশের বিপক্ষে।
উদ্বোধনী দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে নেপাল মুখোমুখি হবে ভুটানের। নেপালের কোচ ইয়াম প্রসাদ গুরুং জয় দিয়ে অভিযান শুরুর কথা বলেছেন এবং ঘুরে-ফিরে করেছেন বাংলাদেশের প্রশংসা, প্রায় দেড় মাসের প্রস্তুতি নিয়েছে এখানে এসেছি। এ দলটা মূলত জাতীয় দলকে সহায়তা করতেই গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে সব দলই ভালো। তবে বাংলাদেশ শিরোপার অন্যতম দাবিদার। আমরা তাদের সঙ্গে লড়াই করব। ভারত ও বাংলাদেশের সঙ্গে খেলাটা সবসমই উপভোগ্য, তবে এখন বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলা এবং জেতা অন্যরকম আনন্দ দেয়।
ভুটানও চাইবে নিজেদের উন্নতির ছাপ এ আসরে রাখতে। দলের কোচ তাংকা মায়া ঘালে বক্তব্যের শুরুতেই বাংলাদেশ ও ভারতকে এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে যাওয়ার জন্য অভিনন্দন জানান। এরপর নিজের দলের প্রস্তুতি ও প্রত্যাশা নিয়ে বলেন, আমরা ভালো প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। এ আঁটসাঁট সূচিতে ভালো ফুটবল উপহার দেয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। ভুটানের দক্ষিণ অঞ্চলের আবহাওয়া ও উচ্চতা বাংলাদেশের খুব কাছাকাছি। ওখানে আমরা ভালো প্রস্তুতি নিয়েছি।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।