Apan Desh | আপন দেশ

ব্যাংক খাতের লুকানো সব সংকট এখন প্রকাশ্যে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:৪৭, ২৭ নভেম্বর ২০২৫

ব্যাংক খাতের লুকানো সব সংকট এখন প্রকাশ্যে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

ছবি: আপন দেশ

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের চাপা পড়ে থাকা সব সংকট একে একে সামনে চলে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

তিনি বলেন,দীর্ঘদিন ধরে লুকিয়ে থাকা খেলাপি ঋণের পাহাড়, প্রভিশন ঘাটতি, পুঁজির সংকট ও তারল্য সংকট— সব দুর্বলতাই এখন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এতে সামগ্রিক আর্থিক স্থিতিশীলতা ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন। 

আরও পড়ুন<<>>ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা

ড. দেবপ্রিয় বলেন, বহু বছর ধরে ব্যাংক খাতের যে অসংখ্য সমস্যা চাপা পড়েছিল, সেগুলো এখন পুরোপুরি দৃশ্যমান। প্রভিশনের গর্ত, অনিয়ন্ত্রিত খেলাপি ঋণ এবং পুঁজি সংকট দেশের অর্থনীতিকে চাপে ফেলেছে। বিনিয়োগে স্থবিরতা, নীতিগত স্বচ্ছতার অভাব ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের অনুপস্থিতি পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে।

তিনি সমালোচনামূলকভাবে প্রশ্ন করেন, চিহ্নিত এসব সমস্যার সমাধানে সরকার কী করেছে? পাঁচ ব্যাংক একীভূতকরণ বা প্রশাসক নিয়োগের বাইরে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নতুন কী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে?

তার মতে, বর্তমান বিনিয়োগ পরিবেশ অত্যন্ত দুর্বল। ব্যক্তি খাতে ঋণপ্রবৃদ্ধি বহু বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন, আর সুদের হার ও নীতিনির্দেশনা নিয়ে এখনও অসংগতি রয়েছে।

এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বন্দর ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন অত্যন্ত জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনও বড় সংস্কার ছাড়া মাত্র ১৩ দিনের মধ্যে বড় বিদেশি বিনিয়োগ আনার ঘোষণা বাস্তবসম্মত নয়। নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট (এনডিএ) এর আড়ালে এমন সিদ্ধান্ত স্বচ্ছতার অভাব তৈরি করে।

তিনি আরও বলেন,অংশীজনকে সম্পৃক্ত না করে নেয়া বড় সিদ্ধান্ত টেকসই হয় না। পূর্ববর্তী সরকারের অসম চুক্তিগুলোর স্বচ্ছতা না থাকায় মানুষের সন্দেহ এখনও কাটেনি।

পলিসি রেট কমানোর বিষয়ে তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের সিদ্ধান্ত উপযোগী হলেও সংকোচনমূলক নীতি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এখন অর্থনীতিকে প্রবৃদ্ধির পথে ফেরাতে হলে জ্বালানি ও গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ, ব্যাংকখাতের তারল্য সংকট এবং ব্যবসায়িক প্রতিবন্ধকতা— এসব গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার এগিয়ে নিতে হবে।

তিনি বলেন, চাহিদার পাশাপাশি সরবরাহ ব্যবস্থায়ও সরকারের সমর্থন প্রয়োজন ছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রয়োজনীয় সহায়তা পায়নি।

ড. দেবপ্রিয় সতর্ক করে বলেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা যেন অর্থনৈতিক উত্তরণে বাধা সৃষ্টি না করে। তিনি সামাজিক-রাজনৈতিক ‘ভূমিকম্প’ এর আশঙ্কার কথাও উল্লেখ করেন, যা বিনিয়োগ পরিবেশকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।

আপন দেশ/এসআর

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

Advertisement

জনপ্রিয়