
ফাইল ছবি
অন্তর্বর্তী সরকারের দশ মাস পার হলো। এ দশ মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশিরভাগ ভোগ্যপণ্যের দাম কমেছে। একসময় আকাশছোঁয়া নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে হাহাকার থাকলেও এখন ক্রেতাদের মুখে এসেছে কিছুটা হাসি। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ঈদুল আজহার আগমুহূর্তে পণ্যের বাজারে স্বস্তি দেখা দিয়েছে।
বাজারে সাধারণত ঈদের সময় দ্রব্যমূল্য হু হু করে বাড়ে। কিন্তু এবার চিত্র অনেকটাই ভিন্ন। আগের বছর যেখানে ঈদের ঠিক আগে খুচরায় কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছিল কেজিতে ২০০ টাকা। সেখানে এক বছর পর সে একই কাঁচামরিচ এখন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। আগের বছরের তুলনায় এবার এ একটি পণ্যের দামই কমেছে প্রায় ৮৫ শতাংশ।
গত দশ মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশিরভাগ পণ্যের দাম কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বাজারে চাহিদা বেড়েছে ঠিকই। তবে আগের বছরের তুলনায় এবার অনেক পণ্যের দামই নিচের দিকে।
যেসব পণ্যের দাম কমেছে
এ বছর বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, কাঁচামরিচ ছাড়াও কমেছে আলু, পেঁয়াজ, চিনি, ডিম, ব্রয়লার মুরগি, চাল, আটা, শাকসবজি, এমনকি কিছু মসলার দামও।
আলু: আগের বছর কেজি ছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। কমেছে ৫০–৬০ টাকা।
পেঁয়াজ: এক বছর আগে দাম ছিল ৮৫–৯০ টাকা/কেজি। এখন ৫০–৫২ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। কমেছে প্রায় ৪০ টাকা।
চিনি: একসময় ১৫০ টাকা/কেজি ছিল। এখন ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কমেছে ৪০ টাকা।
ব্রয়লার মুরগি: আগে ছিল ১৯০–২০০ টাকা/কেজি। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০–১৬০ টাকায়। দাম কমেছে ৪০–৫০ টাকা।
ডিম (লাল): আগে প্রতি ডজন ছিল ১৬০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। কমেছে ৪০ টাকা।
সাদা ডিম: ছিল ১৫০ টাকা ডজন। এখন ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চাল (মিনিকেট): কিছুদিন আগে দাম বেড়েছিল। তবে নতুন চাল বাজারে আসায় দাম কমেছে। বর্তমানে আগের বছরের দামে বিক্রি হচ্ছে, বা তার চেয়েও কমে।
প্যাকেটজাত আটা: আগে ছিল ৬৫–৭০ টাকা প্রতি কেজি। এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।
শাকসবজি ও তরিতরকারি: গাজর: ৫০ টাকা থেকে কমে এখন ২০–২৫ টাকা। বেগুন: ১০০ টাকার বদলে ৫০–৬০ টাকা। টমেটো: ১০০ টাকা থেকে কমে ৬০ টাকা কেজিতে।
এর পাশাপাশি কমেছে এলপি গ্যাসের দামও। জুন মাসের জন্য ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৪৩১ টাকা থেকে ২৮ টাকা কমে ১ হাজার ৪০৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া কমেছে অটোগ্যাসের দামও। প্রতি লিটার অটোগ্যাসের দাম ১ টাকা ২৭ পয়সা কমিয়ে ৬৪ টাকা ৩০ পয়সায় নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেশের কাঁচাবাজারে এখন ভরপুর সরবরাহ। শাকসবজি, ডিম, ব্রয়লার মুরগি কিংবা চাল—সবখানেই মিলছে স্বস্তি। বাজারে নতুন চালের সরবরাহ বাড়ায় কমেছে চালের দামও। অন্যদিকে এলাচের দাম অনেকটাই চড়া থাকলেও স্থিতিশীল রয়েছে অন্যান্য মসলাজাতীয় পণ্যের বাজার।
বিক্রেতা ইমাম উদ্দিন বাবলু জানান,
চিনি, ডাল, আটা ও ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে। আগের মতো সিন্ডিকেট নেই। তাই এবার পণ্য বিক্রি করা সহজ হচ্ছে।রাজনৈতিক সরকার না থাকায় বড় বড় কোম্পানিগুলোর সিন্ডিকেট ভাঙা গেছে। এতে ব্যবসায়ীরা আর দাম বাড়াতে পারছে না।
অন্যদিকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন,
সরকার এখন আর সিন্ডিকেটকে প্রশ্রয় দেয় না। বাজার মনিটরিং ও মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বাজারে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।