
ফাইল ছবি
একসময় ক্ষমতার খড়গে নিয়ন্ত্রিত ছিল গণমাধ্যম। গণঅভ্যুত্থানের পর সে গণমাধ্যম সত্য বলার কতটুকু স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে? প্রতিবেদন লিখতে অনেক সময় লাগে শুধু তথ্য নয়, সত্য নয়—প্রয়োজন হয় সাহসের। আর সে সাহস মগজে ধারণ করে যারা—তারা গণমাধ্যমকর্মী। তাদের অস্ত্র কণ্ঠস্বর, ভাষা আর কলম। কিন্তু প্রতিদিনের মানসিক লড়াইয়ে কতটা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হয় একজন সাংবাদিককে, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।
এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই সাংবাদিকেরা নিজেরাই পড়ে যান আত্মসংকটে। কারণ অনেক সময় সত্য লিখতে গিয়ে বারবার চেপে ফেলতে হয় ব্যাকস্পেস। অনেক তথ্যই এডিট হয়ে যায়, ডিলিট হয়।
গণঅভ্যুত্থানের পর সাংবাদিকদের প্রত্যাশা ছিল, সত্য প্রকাশের স্বাধীনতা আসবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সরকারি নিয়ন্ত্রণ না থাকলেও মনের মধ্যে এখনো রয়ে গেছে ‘সেল্ফ সেন্সরশিপ’।
সরকারের পক্ষ থেকে হয়তো এখন আর বলা হয় না—“এটা লিখো না”, “এভাবে লেখো”, কিংবা “আগে আমাদের দেখিয়ে নাও।” কিন্তু ভয়টা মগজে গেঁথে গেছে। সে ভয় কখনো নিরাপত্তাহীনতার, কখনো চাকরি হারানোর, কখনো হুমকির।
একসময় কিছু সাংবাদিক যেমন পুরনো শাসকদের তাবেদারি করতেন, এখনো অনেকেই নতুন প্রভুদের পা চাটছেন। শুধু সরকার বদলালেই তো গণমাধ্যম বদলায় না—সাংবাদিকদের নিজেদের বদলাতে হবে আগে।
“সত্য এখনো হারিয়ে যায় ব্যাকস্পেসে।” এটা শুধু কথার কথা নয়, বাস্তবতা। কারণ এখনো সাংবাদিকেরা “ফ্যাক্ট চেক” করার আগে সময় কাটান “ফিয়ার চেকে”।
রাষ্ট্র বলতেই পারে, আমরা কোনো চাপ দিচ্ছি না। কিন্তু সাংবাদিকের সোশ্যাল সিকিউরিটি যদি না থাকে তাহলে স্বাধীন সাংবাদিকতা কীভাবে সম্ভব? রাষ্ট্র যদি জেগে জেগে ঘুমায়, তাহলে সত্য শব্দে ধাক্কা লাগবে কি করে?
প্রেস ফ্রিডম এখন শুধু একটি শব্দ—যা ছাপা যায়, কিন্তু প্রয়োগ করা যায় না। তবুও আশাবাদী হওয়া যায়। কারণ প্রতিটি উচ্চারিত সত্য, প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিবেদন একধাপ এগিয়ে দেয় গণমাধ্যমকে। এ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে গণমাধ্যম কি পারবে সত্যের পক্ষে দাঁড়াতে?
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।