Apan Desh | আপন দেশ

‘ট্রাইব্যুনাল আইনে বিচার মানে হাত-পা বেঁধে সাঁতার কাটতে বলা’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:২৩, ২০ অক্টোবর ২০২৫

‘ট্রাইব্যুনাল আইনে বিচার মানে হাত-পা বেঁধে সাঁতার কাটতে বলা’

ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে বিচার প্রক্রিয়াকে অত্যন্ত সীমাবদ্ধ ও কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. আমির হোসেন। তিনি বলেন, এ আইনে বিচার করা মানে, ‘হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে দিয়ে আসামিকে বলা হবে এখন সাঁতার কাটো।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট তিনজন আসামির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ মামলা চলছে। তাদের মধ্যে মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী হিসেবে পরিচিত) হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। আর শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। এ দুজনের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।

এ মামলায় প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ) যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেছেন। আজ আসামিপক্ষের আইনজীবী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করলেন।

আরও পড়ুন>>>গণঅভ্যুত্থানে ৮৩৭ হত্যা মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে

আজ যুক্তিতর্কের শুরুতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সীমাবদ্ধতা নিয়ে কথা বলেন আসামিপক্ষের আইনজীবী আমির হোসেন। তিনি বলেন, দু-তিন দিন আগে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নেতা মীর কাসেম আলীর ছেলে আইনজীবী আহমাদ বিন কাসেম আরমানের একটি ভিডিও দেখেছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যখন মীর কাসেম আলীর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছিল, তখন আহমাদ বিন কাসেম আরমানের সাক্ষাৎকারের ভিডিও সেটি। সে ভিডিওতে আরমান তার বাবার বিচার চলাকালে এ আইনের কঠোর সমালোচনা করেন। 

আরমান বলেন, এ আইনে সাক্ষ্য আইনের সঠিক ব্যবহার না করতে পারাসহ ব্যাপক সীমাবদ্ধতার মধ্যে বিচার হচ্ছে, যা ন্যায়বিচারকে বিঘ্নিত করেছে।

আহমাদ বিন কাসেম আরমানের এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন উল্লেখ করে আমির হোসেন বলেন, এ আইনে মূল যে এভিডেন্স অ্যাক্ট, সেটাকে প্রয়োগ করার কোনো সুযোগ নেই। সিআরপিসিও এ আইনে গ্রহণ করা যায় না। এ আইনে এমন একটি বিচার, যে বিচারে হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে দিয়ে আসামিকে বলা হবে এখন সাঁতার কাটো। এ রকমেরই একটা আইন এটি।

এ মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগে বা ফরমাল চার্জে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে দুর্নীতির সর্বগ্রাসী চর্চার প্রসঙ্গ আনা হয়েছে বলে যুক্তিতর্কের একপর্যায়ে উল্লেখ করেন আমির হোসেন। তিনি বলেন, এ কথাগুলো ততক্ষণ পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত সেসব বিচারের মাধ্যমে প্রমাণিত। এসব ঢালাও বক্তব্য গ্রহণ করার সুযোগ নেই।

তখন ট্রাইব্যুনাল বলেন, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন আমলে নেওয়ার সুযোগ আছে। আপনারাই তো এই আইন তৈরি করেছেন।

জবাবে আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, গণমাধ্যমে এলেই সবকিছু সত্য হয়ে যায় না। তা ছাড়া অন্য আইনে পত্রপত্রিকার সংবাদের মূল্য নেই। শেখ হাসিনা আইন করেছেন বলেই যে এটা ভালো আইন হয়েছে, সেটি তিনি বলছেন না। যে–ই আইন করুক না কেন, ভুল মানে ভুলই।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়