Apan Desh | আপন দেশ

ইয়েমেনের জুকার দ্বীপে ‘বিমান ঘাঁটি’, মালিক কে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:০৭, ২১ অক্টোবর ২০২৫

ইয়েমেনের জুকার দ্বীপে ‘বিমান ঘাঁটি’, মালিক কে?

ছবি: সংগৃহীত

লোহিত সাগরের গুরুত্বপূর্ণ জলপথে যখন বাণিজ্যিক জাহাজে হামলার ঘটনায় হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করছে, ঠিক তখনই ইয়েমেনের জুকার দ্বীপে এক রহস্যময় বিমানঘাঁটি নির্মাণের খবর সামনে এসেছে। এ ঘাঁটি কে বা কারা তৈরি করছে তা এখনো অজানা। কেউ প্রকাশ্যে মালিকানা দাবি না করলেও আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতে এটি নতুন এক শক্তির আবির্ভাবের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

জুকার দ্বীপটি ইয়েমেনের উপকূল থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি হুতি নিয়ন্ত্রিত হুদায়দা বন্দরের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে এবং বাব আল-মান্দেব প্রণালির একেবারে নিকটে। এ প্রণালি দিয়ে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ তেল, গ্যাস ও বাণিজ্যিক পণ্যবাহী জাহাজ যাতায়াত করে। ফলে দ্বীপটির অবস্থান সামরিক ও বাণিজ্যি— দুই দিক থেকেই অত্যন্ত কৌশলগত।

স্যাটেলাইটে ধরা পড়া সাম্প্রতিক ছবিতে দেখা যাচ্ছে, এখানে একটি বড় আকারের রানওয়ে তৈরির কাজ চলছে। এপ্রিল মাসে দ্বীপে ডক নির্মাণের প্রথম ধাপ শুরু হয়। কয়েক মাসের মধ্যেই প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অ্যাসফল্ট বিছানো হয়। অক্টোবরের ছবি দেখায়, রানওয়ের মার্কিং পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এসব কাজ এত দ্রুত গতিতে হয়েছে যে, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এর পেছনে বড় কোনো আন্তর্জাতিক শক্তি রয়েছে।

আরও পড়ুন<<>>জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী তাকাইচি

তবে এখন পর্যন্ত কোনো দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘাঁটির মালিকানা স্বীকার করেনি। যদিও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে সম্পর্কিত কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এ প্রকল্পে অর্থায়ন ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে। দ্বীপটির বর্তমান নিয়ন্ত্রণ রয়েছে তারেক সালেহের বাহিনীর হাতে, যিনি সাবেক ইয়েমেনি প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহের ভাতিজা এবং ইউএইর ঘনিষ্ঠ মিত্র।

জুকার দ্বীপের ইতিহাসও নাটকীয়তায় ভরা। ১৯৯০-এর দশকে দ্বীপটি ইরিত্রিয়ার দখলে চলে যায়। পরে আন্তর্জাতিক রায়ের ভিত্তিতে ১৯৯৮ সালে ইয়েমেন পুনরায় এর নিয়ন্ত্রণ পায়। তাই এ দ্বীপ সবসময়ই বৈরী শক্তিগুলোর নজরে থেকেছে।

বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ বলছে, এ রহস্যময় বিমানঘাঁটির প্রধান লক্ষ্য হতে পারে হুতি গোষ্ঠীর সমুদ্রপথে হামলা ঠেকানো। পাশাপাশি লোহিত সাগর ও বাব আল-মান্দেব প্রণালিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যপথকে নিরাপদ রাখা এবং ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের অস্ত্র সরবরাহ রোধ করা এর অন্যতম উদ্দেশ্য হতে পারে।

এ ঘাঁটি চালু হলে পুরো লোহিত সাগর অঞ্চল নজরদারির আওতায় চলে আসবে। ফলে শুধু ইয়েমেন নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বহু দেশের ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে। আর এ কারণেই আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে— এ রানওয়ে কি শুধুই একটি সামরিক ঘাঁটি, নাকি মধ্যপ্রাচ্যে নতুন শক্তির আবির্ভাবের ঘোষণাপত্র?

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়