Apan Desh | আপন দেশ

ইরানি হামলায় ক্ষতিপূরণ চেয়েছে ৩৯ হাজার ইসরায়েলি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক    

প্রকাশিত: ১৮:২২, ২৫ জুন ২০২৫

ইরানি হামলায় ক্ষতিপূরণ চেয়েছে ৩৯ হাজার ইসরায়েলি

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তেল আবিবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সামনে উদ্ধারকর্মীরা। ২২ জুন ২০২৫। ছবি: রয়টার্স

রানের একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র-ড্রোন হামলায় পর্যুদস্ত ইসরায়েলিরা এখন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ চাইছেন। এ জন্য প্রায় ৩৯ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে মঙ্গলবার (২৪ জুন) এ খবর জানিয়েছে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু।

সংবাদমাধ্যমটির খবর, ইরানি হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য একটি ক্ষতিপূরণ তহবিল গঠন করেছে ইসরায়েলের কর কর্তৃপক্ষ। ১৩ জুন ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত শুরুর পর থেকে এ তহবিল থেকে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মোট ৩৮ হাজার ৭০০ আবেদন জমা পড়েছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ঘরবাড়ি-ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন জমা পড়েছে ৩০ হাজার ৮০৯টি। এ ছাড়া ৩ হাজার ৭১৩টি আবেদন জমা পড়েছে যানবাহনের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার কারণে। যন্ত্রপাতি আর অন্যান্য জিনিস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন জমা পড়েছে ৪ হাজার ৮৫টি।

ইসরায়েলি ওয়েবসাইট বেহাদ্রেই হারেদিমের তথ্যমতে, শুধু তেল আবিবেই ক্ষতিপূরণ চেয়ে ২৪ হাজার ৯৩২টির বেশি আবেদন জমা পড়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের আশকেলন শহরে আবেদন জমা পড়েছে ১০ হাজার ৭৯৩টি। ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ইসরায়েলিদের কী পরিমাণে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে, সেটা এখনো জানানো হয়নি।

  • ইরানে নিহত কমান্ডার ও বিজ্ঞানীদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা শনিবার

ইসরায়েলের হামলায় নিহত ইরানের জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডার ও শীর্ষ বিজ্ঞানীদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা আগামী শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ খবর জানিয়েছে।

যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার এক দিন পর আজ বুধবার ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ১২ দিন ধরে চলা ইহুদি রাষ্ট্রের আগ্রাসনে শহীদ কমান্ডার ও বিজ্ঞানীদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা আগামী শনিবার রাজধানী তেহরানে অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে এ আয়োজন শুরু হবে।

১৩ জুন ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল। জবাবে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা শুরু করে ইরান। এ সংঘাতের মধ্যে ২১ জুন ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালায়। এর জবাব দেয় ইরান। পরদিন ২৩ জুন কাতারের মার্কিন সামরিক ঘাঁটি নিশানা করে ইরান হামলা চালায়। টানা ১২ দিন ধরে চলা এ সংকটের মধ্যে হঠাৎ যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যা গতকাল মঙ্গলবার কার্যকর হয়েছে।

সংঘাতে ইরানের অন্তত ১৪ জন বিজ্ঞানীকে হত্যা করার দাবি করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাও।

  • ইসরায়েলি গুপ্তচর সন্দেহে খুজেস্তানে ২৩ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনলেন কৌঁসুলিরা

ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার সন্দেহে ইরানের খুজেস্তান প্রদেশে ২৩ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম এমন তথ্য প্রকাশ করেছে। খবর আল জাজিরার।

তাসনিমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরাক সীমান্তঘেঁষা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আহভাজের সরকারি কৌঁসুলিরা এ ২৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড’ ও ‘শত্রুর পক্ষে তথ্য সংগ্রহ ও প্রচার চালানোর’ মতো অভিযোগ এনেছেন। তবে স্বাধীন গণমাধ্যম বা মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এসব অভিযোগ যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

  • ইরানে ট্রাম্পের হামলাকে সমর্থন করেন না বেশির ভাগ মার্কিন: জরিপ

ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় ২২ জুন ভোরে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের সিচুয়েশন কক্ষে বসে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে হামলা পর্যবেক্ষণ করেন। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ট্রাম্পের হামলার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নতুন মাত্রা পায়। খবর সিএনএনের।

হামলার জবাব দিতে পিছপা হয়নি ইরানও। এক দিনের মধ্যে উপসাগরীয় দেশ কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় তেহরান। পরবর্তী সময়ে ট্রাম্পের উদ্যোগে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিন ধরে চলা সংঘাতের আপাতত লাগাম টানা হয় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করে।

ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানে হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্রের হামলা চালানোর ঘটনা সমর্থন করছেন না বেশির ভাগ মার্কিন নাগরিক। সিএনএন/এসএসআরএসের সাম্প্রতিক এক জরিপে এই মনোভাব উঠে এসেছে। কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের পাল্টা হামলার আগে জরিপটি করা হয়েছে।

জরিপে প্রশ্ন ছিল, ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপ সমর্থন করেন কি না? জবাবে জরিপে অংশ নেওয়া ৫৬ শতাংশ মার্কিন বলেছেন, তারা এটা সমর্থন করতে পারছেন না। আর হামলার পক্ষে রয়েছেন ৪৪ শতাংশ মার্কিন। ট্রাম্পের দল রিপাবলিকানদের মধ্যে ৮২ শতাংশ সামরিক পদক্ষেপের পক্ষে। অন্যদিকে ডেমোক্রেটিক দলের ৮৮ শতাংশ বলেন, এ পদক্ষেপ সমর্থনযোগ্য নয়।

জরিপে অংশ নেয়া ৫৮ শতাংশ মার্কিন বলছেন, ট্রাম্পের সামরিক পদক্ষেপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ইরান আরও বড় হুমকি হয়ে উঠবে। মাত্র ১৫ শতাংশ মনে করছেন, ইরান বড় হুমকি হবে না। ৮৫ শতাংশ ডেমোক্র্যাট মনে করছেন, ইরান আরও বড় হুমকি হয়ে উঠবে। রিপাবলিকানদের মধ্যে এ হার ৩০ শতাংশ।

ইরানে হামলা চালিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন—এমনটা মনে করছেন জরিপে অংশ নেওয়া মাত্র ২২ শতাংশ মার্কিন। ২৩ শতাংশ মাঝামাঝিতে বা নিরপেক্ষ অবস্থানে রয়েছেন। অন্যদিকে ৩৮ শতাংশ মনে করছেন, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল না। রিপাবলিকানদের মধ্যে ৫১ শতাংশ মনে করছেন, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত সঠিক। ডেমোক্র্যাটদের ৭১ শতাংশের মতে, ট্রাম্প সঠিক সিদ্ধান্ত নেননি।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়