Apan Desh | আপন দেশ

বোরকা পরে পালাতে হবে, ছাত্রনেতাদের বেরোবি সমন্বয়কের হুমকি

বেরোবি প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ১৮:২৭, ২২ জুলাই ২০২৫

বোরকা পরে পালাতে হবে, ছাত্রনেতাদের বেরোবি সমন্বয়কের হুমকি

বেরোবি সমন্বয়ক আশিকুর রহমান আশিক।

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ছাত্র রাজনীতি চাওয়া শিক্ষার্থীদের বোরকা পড়ে দেয়াল টপকাইয়া পালাতে হবে বলে হুমকি দিয়েছেন সমন্বয়ক আশিকুর রহমান আশিক।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গ্রুপে এ হুমকি দেন বেরোবির এ সমন্বয়ক। তিনি পোস্টে উল্লেখ করেন, রাজনীতি বন্ধ চাওয়াতে নাকি নব্য কিছু কুরুত বাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হুমকি দিচ্ছে। তারা নাকি বলতেছে, কিছুদিন পরে তারা ক্ষমতায় আসলে তাদের দেখে নিবে, ক্যাম্পাসে ঢুকতে দিবে না। এ বিপ্লবের পরও দেখতেছি, সব এক। মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।

এসব নব্য রাজনীতিবিদদের উদ্দেশ্য বলতেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা শিক্ষার্থীর গায়ে ফুলের টোকা পড়লে আপনাদের অবস্থা পোমেল, টগর, কুরুত বাবুলেল মতো হবে। বোরকা পরে মেয়েদের হলে দেয়াল টপকাইয়া পালাতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে লেজুরবৃত্তিক রাজনীতির কোনো স্থান হবে না। অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচন চাই।

ছাত্রনেতা লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জহির রায়হান বলেন,দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে ছাত্রদল তার নীতি আদর্শকে বুকে ধারণ করে প্রকাশ্যে সকল ক্যাম্পাসে রাজনীতি করেছে। আমরা ছাত্রদল বিগত সাড়ে ১৫ বছরে একটি দিনের জন্যও আমরা আমাদের পরিচয় লুকিয়ে কোনো ক্যাম্পাসে প্রবেশ করিনি। ছাত্রদল একদিনের জন্যও ছাত্রলীগ কিংবা ফ্যাসিস্টদের দোসরদের সঙ্গে হাত মেলায়নি।

তিনি বলেন, আমার ভাইয়েরা গুম হয়েছে , খুন হয়েছে। আমাদের ভাইদের সরাসরি গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তারপরও তার সহকর্মীরা ভয় পেয়ে রাজপথ ছেড়ে যায়নি। আমরা সে ফ্যাসিস্টদের মোকাবেলা করে আজ হাসিনা মুক্ত বাংলাদেশে বাস করি। আমরা ক্যাম্পাস থেকে পালাবো কেন? আমরা তো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়েই রাজনীতি করব। পালাবে তারা, ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করবে। 

বেরোবি ছাত্রদলের আহবায়ক আল আমিন বলেন, নামধারী সমন্বয়কদের এমন পোস্ট ফ্যাসিবাদের বহিঃপ্রকাশ। আমরা দেখি এরা বিগত সময়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি করে এসেছে। এখন ক্যাম্পাসে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে চাচ্ছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের অনেক আগেই বয়কট করেছে। রাজনীতি করা এটা একজন মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। এটা হরণ করার অধিকার কারও নেই। আমরা চাই, প্রশাসন যাতে দ্রুত ছাত্র রাজনীতির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।

শিবির সভাপতি সুমন সরকার বলেন, যিনি হুমকি দিয়ে পোস্ট দিয়েছেন, তিনিসহ কয়েকজনের ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এখন আবার তারাই গলাবাজি করছে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য প্রক্টর এবং ছাত্রউপদেষ্টা অফিসের শাড়ি-চুড়ি রেখেছে তারা। কাজটি মোটেও ঠিক হয়নি।

উল্লেখ্য, রোববার (২০ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় ছাত্র রাজনীতির অভিযোগ তুলে আশিকুর রহমান আশিক, শামসুর রহমান সুমন, আরমান হোসেন, বাংলাদেশ গঠনতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস) রংপুর মহানগর সদস্য সচিব হাজিমুল হক ও রংপুর জেলা কমিটির মুখপাত্র রুম্মানুল ইসলাম রাজ প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টার চেয়ারে শাড়ি-চুড়ি রাখেন। এ ঘটনার পরপরই শিক্ষকদের এবং নারীদের অবমাননার অভিযোগ এনে বিক্ষোভ মিছিল করে বেরোবি শাখা ছাত্রদল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

আপন দেশ/এমএইচ
 

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়