
ছবি : আপন দেশ
জুলাই বিপ্লবে নারীদের অবদান স্মরণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পালিত হয়েছে 'জুলাই উইমেন্স ডে'। সোমবার (১৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে 'জুলাই উইমেন্স ডে' উপলক্ষ্যে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা জুলাই বিপ্লবে নারীদের ভুমিকা, জুলাই বিপ্লবে নারীরা কীভাবে পরিবর্তনের অগ্রদূত হয়ে উঠেছিলেন, যুগে যুগে নারীরা কীভাবে অধীকার আদায়ের জন্য সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে তাদের কন্ঠস্বর কতটা জরুরি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন৷
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনের সভাপতিত্বে সভায় আলোচক ড. রায়হানা শামস ইসলাম বলেন, জুলাই আমার কাছে জাগরণ এবং এই জুলাইয়ের প্রাণভোমর ছিলো আমাদের মেয়েরা। জুলাইয়ের মিছিলে তারা শুধু গলা মিলাইনি, তারা ঘন্টার পর ঘন্টা বৃষ্টিতে ভিজেও আন্দোলন করে গেছে। ছেলেদের সাথে সমানতালে আন্দোলন করা এবং নিজের ভাইয়ের মতো করে তাদেরকে বাঁচাতে আমাদের মেয়েরা যেভাবে বেষ্টনী তৈরি করেছিলো, আমরা সবাই তার সাক্ষী। ১৪ জুলাই দিবাগত রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা হলের তালা ভেঙে যেভাবে বেড়িয়ে আসছিলো এটাই জুলাইকে আরও ত্বরান্বিত করেছিলো। তখন থেকেই আমি ব্যাক্তিগতভাবে জড়িয়ে গেছি এই বিপ্লবের সাথে।
তিনি আরও বলেন, জুলাই ছিলো নাগরিক প্রতিরোধ। আমরা বহুদিন প্রজা হয়ে ছিলাম, আমাদের প্রজার মতো রাখা হয়েছে যে কারণে আমরা ভুলে গেছিলাম আমরাও এ দেশের নাগরিক। মেয়েরা ঘরে থাকবে বাইরে থাকবে এবং তারা নাগরিক হিসেবে তাদের ভূমিকা রাখবে।
আরেক আলোচক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ বলেন, জুলাইকে আমরা পরিপূর্ণভাবে ধারণ করেছি এবং জুলাইকে আমরা ভুলিনি এ অনুষ্ঠানটিই তার একটি প্রমাণ। জুলাইয়ে আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ফ্যাসিবাদীদের অনেক অত্যাচারের চিত্র দেখেছি। এ জুলাই কোনো রাজনৈতিক ঘটনা ছিল না, এটি ছিল একটি সার্বিক গণ-অভ্যুত্থান।
তিনি আরও বলেন, জুলাইয়ের সময়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মিছিলে আমরা প্রথম সাঁরিতেই আমাদের মেয়েদের দেখেছি। তাঁরা রক্তচক্ষুর সঙ্গে আন্দোলন করেছে এবং ফ্যাসিস্টদের হাতে অত্যাচারিতও হয়েছে। তবুও তারা আন্দোলন থেকে পিছপা হননি। জুলাইয়ে নারী শিক্ষকদেরও অবদান ছিল অনেক। তাই এখানে নারী-পুরুষের মধ্যে কোনো ভেদাভেদের সুযোগ নেই। উভয়ই সহাবস্থানে থেকেই আন্দোলনে অংশ নিয়েছে।
জুলাই আগস্টে কোনো ‘আমি' শব্দ নেই, শব্দটি 'আমরা' হবে বলে মন্তব্য করেছেন আলোচনা সভার প্রধান অতিথি রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব। তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবে আমরা অসাধারণ মানুষদের কাজ দেখিনি, সাধারণ মানুষদের অসাধারণ কাজ দেখেছি। দল, মত নির্বিশেষে সবাই তাদের অধিকার আদায়ের জন্য, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে এসেছিলো। একক কোনো ব্যাক্তির মাধ্যামে এ অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়নি। সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণে এটি সফল হয়েছিলো। নারীরা সমানে সমানে ছেলেদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আন্দোলন করে গেছে। আন্দোলন সংগ্রামসহ সকল জায়গায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য সমাজকে সুশিক্ষিত হিসাবে গড়ে তুলতে হবে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য ড. সালেহ্ হাসান নকীব। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ড. মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. মতিয়ার রহমান। সভায় আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রায়হানা শামস ইসলাম, ফিশারীজ বিভাগের অধ্যাপক ড. ফৌজিয়া এদিব ফ্লোরা ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ৷
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।