Apan Desh | আপন দেশ

নিটার প্রশাসন-শিক্ষার্থীদের মধ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

নিটার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:১৭, ১ মে ২০২৫

আপডেট: ১৯:৪১, ১ মে ২০২৫

নিটার প্রশাসন-শিক্ষার্থীদের মধ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

ছবি: আপন দেশ

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ (নিটার)-এ শিক্ষার্থীদের সমস্যা, দাবিদাওয়া ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) নিটারের কনফারেন্স রুমে এ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় শিক্ষার্থীরা লিখিতভাবে তাদের বিভিন্ন দাবি ও পরামর্শ তুলে ধরেন। নিটারের পরিচালক সভায় উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনেন ও খোলামেলা আলোচনা করেন।

প্রথমেই শিক্ষার্থীরা একাডেমিক দুর্বলতা, ইয়ার ড্রপ ও রিটেক সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ জানান। তারা বলেন, চলতি সেমিস্টারে ৫৭ জন শিক্ষার্থী ইয়ার ড্রপের শিকার হয়েছেন। এ বিষয়ে সমাধান চান তারা। 

জবাবে পরিচালক বলেন, একাডেমিক দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ক্লাস, মনিটরিং ও টিচার সাপোর্ট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও এখনই কাউন্সেলিং সেশন চালু করা সম্ভব না। তবে ‘স্টুডেন্ট ফোরাম’ গঠন করে নিয়মিত মতবিনিময়ের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শিক্ষার্থীরা ইনকোর্স, অ্যাটেনডেন্স ও ফাইনাল পরীক্ষার নম্বর বণ্টন (২৫:৫:৭০) নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তারা বলেন, সিলেবাস যেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়। এতে সঠিক প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব হবে। পরিচালক প্রস্তাবটি গ্রহণ করে বলেন, ভবিষ্যতে এ নিয়ে আলোচনা হবে।

ল্যাব কার্যক্রমে নম্বর বণ্টনের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। শিক্ষার্থীরা জানান, ৮০ শতাংশ নম্বর দিলেও অনেক সময় তা বাস্তবে প্রতিফলিত হয় না। এ বিষয়ে পরিচালক গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ল্যাব মূল্যায়ন পদ্ধতি পর্যালোচনা করা হবে ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে।

ইইই বিভাগে ল্যাব সরঞ্জামের ঘাটতির কথা জানানো হলে, পরিচালক বলেন, আগামী বাজেটে নতুন যন্ত্রপাতি কেনা হবে। ইইই বিভাগকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দেয়া হবে।

পরিকাঠামোগত সমস্যার মধ্যে সিসিটিভি, জেনারেটর সংযোগ ও ক্লাসরুমে প্রজেক্টর স্থাপনের বিষয়ে শিক্ষার্থীরা দাবি তোলেন। জবাবে পরিচালক জানান, জুনের মধ্যে ক্যাম্পাসে সিসিটিভি সংযোগ সম্পন্ন হবে। মে মাসের মধ্যেই প্রতিটি ক্লাসে প্রজেক্টর বসানো হবে। ইন্টারনেট ব্যবস্থাও উন্নত করা হবে।

গবেষণা ও ইন্টার্নশিপ নিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, তারা CRIR-এর সঙ্গে আরও বেশি কাজ করতে চান। পরিচালক জানান, এ বিষয়ে CRIR-এর সঙ্গে পুনরায় আলোচনা করা হবে। প্রতিটি বিভাগে গবেষণার জন্য নির্দিষ্ট গাইডলাইন দেয়া হবে।

অর্থনৈতিক সংকট প্রসঙ্গে পরিচালক বলেন, প্রায় ২.৫ কোটি টাকা বকেয়া ফি থাকায় কিছু উন্নয়ন কাজ পিছিয়ে গেছে। তাই সময়মতো ফি পরিশোধে শিক্ষার্থীদের সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, নিটার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হওয়ায় একাডেমিক ক্যালেন্ডার, পরীক্ষার সময়সূচি ও মূল্যায়ন পদ্ধতি ঢাবির নির্দেশনা অনুসারে চলবে।

রিটেক ফি বিভাগভেদে কেন ভিন্ন হয়—এ প্রশ্নে পরিচালক জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দেয়া হবে। সিএসই ও ইইই শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার সময় পর্যাপ্ত গ্যাপ না পাওয়ার অভিযোগ করলে, পরিচালক বলেন, বিষয়টি আলোচনায় আছে। সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।

চলমান ১৪ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিচালক জানান, তদন্ত দ্রুত শেষ হবে। ফলাফল যথাসময়ে জানানো হবে।

শিক্ষার্থীরা মনে করেন, এ মতবিনিময় সভা প্রশাসনের আন্তরিকতা ও জবাবদিহিতার প্রতিফলন। এতে প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ ও ইতিবাচক হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন উদ্যোগ নিয়মিত হলে নিটার একটি শিক্ষাবান্ধব ও উন্নয়নমুখী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে বলে তাদের প্রত্যাশা।

আপন দেশ/এমবি
 

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়