Apan Desh | আপন দেশ

খালেদা জিয়া আগে মারা যাওয়া নিয়ে যা বললেন চিকিৎসক

নিজস্ব প্রতিবেদক, আপন দেশ

প্রকাশিত: ১৬:৩৬, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১৮:৪৭, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

খালেদা জিয়া আগে মারা যাওয়া নিয়ে যা বললেন চিকিৎসক

খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ৩০ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) সকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

তার মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মৃত্যুর সময় নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই দাবি করছেন তিনি আগেই মারা গিয়েছেন। তবে এ তথ্যকে সম্পূর্ণ ‘ভুল ও গুজব’ বলে নিশ্চিত করেছেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মারুফ রায়হান খান।

ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি বলেন, ‌আমার ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন স্পেশালিস্ট ক্লাসমেট ও ক্লোজ ফ্রেন্ড ছিলেন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম সরাসরি চিকিৎসক। প্রতিদিন ওর সঙ্গে কথা হতো উনার আপডেট ও ক্লিনিক্যাল প্যারামিটার্স নিয়ে। কাল রাতেই আমরা বুঝতে পারছিলাম এ রাতটি আর হয়তো পার হবে না। গত প্রায় এক মাসের কনভারসেশন শেষ হলো এ মেসেজে। এতো খারাপ লাগছে। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন।

মহান আল্লাহ আমাদের শৈশবের প্রধানমন্ত্রীকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন। তিনি দল-মত ছাড়িয়ে বাংলাদেশের আপামর মানুষের প্রিয়ভাজন হয়ে উঠেছিলেন। ফেসবুকে অজস্র মানুষ প্রচার করে বেড়াতেন উনি অনেক আগেই মারা গিয়েছেন, নানা কারণে ইচ্ছে করে সেটির ঘোষণা দেয়া হচ্ছে না--এ কথাটি সম্পূর্ণ ভুল প্রচারণা। কাল রাতেও তিনি ডায়ালাইসিস পেয়েছেন। 

ডায়ালাইসিস পাবার পর তার ব্লাড প্রেশার ফল করতে শুরু করে। রাত ১১টার দিকে ৩ ধরনের, ২টার দিকে ৪ ধরনের প্রেশার বাড়ানোর ইনজেকশান একই সঙ্গে চলতে থাকার পরেও তার ব্লাড প্রেশার বাড়ানো যাচ্ছিল না। তখনই যা বোঝার আমরা বুঝে ফেলেছিলাম।

রক্তের টোটাল কাউন্ট মাত্রাতিরিক্ত কমে গিয়েছিল। যার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছিল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার মারাত্মক অবনতি হয়েছে। আর্টারি লাইনে ও এইচ বি ক্যাথেটার লাইনে অত্যন্ত নটোরিয়াস ব্যাকটেরিয়ার গ্রোথ পাওয়া গিয়েছিল। যা অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট ছিল, অর্থাৎ কোনো অ্যান্টিবায়োটিকই আর কাজ করছিল না।

পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক হওয়ায় তার পরিবারের সবাইকে রাতে এসে দেখে যাবার জন্য বলা হয়। কেউ কেউ আগ থেকে ছিলেন, আবার কেউ কেউ ছুটে আসেন দ্রুত হাসপাতালে। বাংলাদেশের  অধিকাংশ, এমনকি প্রচুর শিক্ষিত মানুষও অতিকথন ও গুজব পছন্দ করে। যা তাদের শিক্ষাদীক্ষার কোয়ালিটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। অনেক সাংবাদিক পর্যন্ত বিশ্বাস করতো না যে উনি বেঁচে ছিলেন। 

এ পুরো সময়ে অনেককে প্রায় জোর করে বোঝাতে হয়েছে যে তিনি বেঁচে আছেন। কিছু সময়ে সাময়িক উন্নতির জন্য তার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়ার প্রচেষ্টাও করা হয়েছে। এমন একজন পেশেন্টকে কীভাবে মানুষ মৃত বানিয়ে ফেলতো? এসব মানুষের মেন্টালিটি দেখে আফসোস হয়।

আজ তিনি মারা গিয়েছেন। আজ শোকের দিন। আজ কি এতো বিতং করে এসব ব্যাখ্যা প্রদান করার দিন? আজ কি প্রমাণ করার দিন যে তিনি এতোদিন আসলেই বেঁচে ছিলেন? কিন্তু ন্যূনতম বিবেকহীন লোকজনের নোংরামি দেখে দেখে এসব না লিখে উপায়ও নেই।

‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা অধিক ধারণা থেকে দূরে থাক। কারণ কোনো কোনো ধারণা পাপ। আর তোমরা একজন অন্য জনের গোপনীয় বিষয় অনুসন্ধান কোরো না। আর একজন অন্যজনের গিবত কোরো না।’ (সূরা আল-হুজুরাত : আয়াত ১২)’

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

Advertisement

জনপ্রিয়