Apan Desh | আপন দেশ

হাসিনাকে নিয়ে কৌশল বদলাচ্ছে ভারত

নিজস্ব প্রতিবদেক

প্রকাশিত: ১৯:২৭, ২৬ জুলাই ২০২৫

আপডেট: ২১:১০, ২৬ জুলাই ২০২৫

হাসিনাকে নিয়ে কৌশল বদলাচ্ছে ভারত

শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি।

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। কিন্তু এ অবস্থান নিয়ে ভারত নীরব ও সতর্ক কৌশল নিচ্ছে। একসময় যাকে ‘সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র’ হিসেবে দেখত দিল্লি, আজ সে শেখ হাসিনাকেই সরাসরি সামনে আনতে চাইছে না ভারত। বদলে তারা বাংলাদেশে গঠিত নতুন সরকারের সঙ্গে ধীরে ধীরে সম্পর্ক গড়ে তুলছে।

শেখ হাসিনা এখন ভারতের জন্য বড় এক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য তিনি যেন একপ্রকার “গলার কাঁটা”। তাই তাকে নিয়ে ভারত এখন কৌশলগতভাবে একটি নিরপেক্ষ অবস্থান নিচ্ছে।

বর্তমানে শেখ হাসিনা দিল্লিতে একপ্রকার ‘নজরবন্দি’ অবস্থায় রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। তিনি রাজনীতিকদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারছেন না। এমনকি আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। লন্ডন থেকে ভারতে গিয়ে তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করেও ড. হাছান মাহমুদ তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেননি। ওবায়দুল কাদেরও এ বিষয়ে ব্যর্থ হয়েছেন বলে দলের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানাচ্ছে।

ভারত শেখ হাসিনাকে এখনই বাংলাদেশে ফেরত পাঠাচ্ছে না। তবে তার সঙ্গে সরাসরি বৈঠক কিংবা আলোচনার পথও আপাতত বন্ধ রেখেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, দিল্লি এখন পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে ধাপে ধাপে ভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার পথে হাঁটছে।

আরও পড়ুন>>>অনাড়ম্বর আয়োজনে ডেইলি আপন দেশ ডটকমের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

ভারতের অবস্থান এখন স্পষ্ট—তারা শেখ হাসিনাকে নয় বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিচ্ছে। আওয়ামী লীগই যে ভারতের একমাত্র ভরসা সে নীতি থেকে সরে এসেছে তারা। বিকল্প শক্তির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে।

শেখ হাসিনার পতনের পর নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে নতুন সরকার এসেছে। কিন্তু মোদি সরকার তাদের ভালোভাবে নিচ্ছে না। যদিও প্রথমদিকে ইউনূস সরকারকে স্বীকৃতি দিতে খুব বেশি দেরি করেনি। এখন তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ঠাণ্ডা। ব্যবসা-বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা, সীমান্তে অস্থিরতা, চিকিৎসা ভিসা বন্ধ—এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে ভারত একটি কড়া বার্তা দিচ্ছে।

ভারতের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো বাংলাদেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সীমান্তে গুলি, ‘পুশ-ইন’ ও কূটনৈতিক নিরবতা এখন নিয়মিত ঘটনা। বাংলাদেশও দিল্লিতে নতুন একজন অভিজ্ঞ কূটনীতিক পাঠিয়েছে। কিন্তু সম্পর্কের বরফ এখনও গলছে না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এ টানাপোড়েন নিরসনের একমাত্র উপায় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। ভারতের চাওয়া, বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক—যা বর্তমান সরকারের পক্ষে কঠিন।

ভারত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগকে একমাত্র মিত্র হিসেবে বিবেচনা করেছে। বিকল্প ভাবেনি। এখন শেখ হাসিনার পতনের পর ভারতও যেন বাংলাদেশ থেকে ছিটকে পড়েছে। এ কারণে ভারতের নীতিনির্ধারকরা হতাশ। এমনকি ভারতের নীতিনির্ধারকরা স্বীকার করছেন—বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ করাই ছিল তাদের বড় ভুল।

আপন দেশ/এমবি
 

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়