Apan Desh | আপন দেশ

হাসিনার একনায়কতন্ত্রই আ.লীগের পতন

নিজস্ব প্রতিবদেক

প্রকাশিত: ০৯:৫৮, ১২ মে ২০২৫

হাসিনার একনায়কতন্ত্রই আ.লীগের পতন

শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিজ হাতে ধ্বংস করেছেন শেখ হাসিনা—এমনটাই বলছেন বিশ্লেষকরা। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর দলের ঘুরে দাঁড়ানোর সামান্য সুযোগটুকুও হারিয়ে গেছে তার অদূরদর্শী নেতৃত্ব ও দাম্ভিকতার কারণে। প্রতিকারমূলক কোনো উদ্যোগ না নিয়ে তিনি দলকে ঠেলে দিয়েছেন একপ্রকার আত্মবিনাশের পথে।

অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে এখন দলটির সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ। শুরু হয়েছে নিবন্ধন বাতিলের প্রক্রিয়া। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অধীনে বিচার চলবে আওয়ামী লীগ এবং তাদের অঙ্গসংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে। এ বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলীয় কোনো কর্মসূচি, প্রচার, এমনকি অনলাইনে উপস্থিতিও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

পাঁচ আগস্ট ভারতে পলায়নের সময়ও শেখ হাসিনা দলের জন্য কার্যকর কোনো রণনীতি গ্রহণ করতে ব্যর্থ হন। বরং বিদেশে বসেই অন্তর্বর্তী সরকার উৎখাতের চেষ্টা করেছেন—এমন অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। তিনি জাতির কাছে দুঃশাসন ও গণহত্যার জন্য কোনো দুঃখপ্রকাশ করেননি। বরং উসকানিমূলক বার্তায় পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করেছেন।

আরও পড়ুন>>>শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার প্রতিবেদন দাখিল আজ

আন্তর্বর্তী সরকারের জারি করা নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, এখন থেকে রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধেও যুদ্ধাপরাধ বা গণহত্যার অভিযোগে বিচার করা যাবে। প্রমাণিত হলে সে দল নিষিদ্ধ, সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও নিবন্ধন বাতিলের মুখে পড়তে পারে। এর ফলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে না।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, তারা সরকারি গেজেট প্রকাশের পর দলটির নিবন্ধন স্থগিত বা বাতিল বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। নিবন্ধন স্থগিত থাকলে দলীয় পরিচয়ে প্রার্থী মনোনয়ন, প্রতীক বরাদ্দ কিংবা ভোটার তালিকা পাওয়ার সুযোগ থাকবে না।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের সব ধরনের কার্যক্রম ঠেকাতে তৎপর। থানার ওসি, জেলার এসপি থেকে শুরু করে র‌্যাব, ডিবি—সব ইউনিটকে মৌখিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। দলটির মিছিল, সভা, সেমিনার, বা অনলাইন প্রচারণায় অংশগ্রহণ করলেই নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য হিসেবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অন্য রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা দ্রুত বিচার ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেছে।

একইসঙ্গে দেশের সংবিধান সংস্কারে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে প্রস্তাব এসেছে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা সীমিত করা ও একজন ব্যক্তির জন্য সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিধান সংযোজনের। বিশ্লেষকরা বলছেন, একনায়কতন্ত্র ঠেকাতে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ এখন সময়ের দাবি।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়