শুভেন্দু অধিকারী।
ভারতের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা শুভেন্দু অধিকারী গাজায় ইসরাইলের চলমান গণহত্যার উদাহরণ টেনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার হুমকি দিয়ে বিরোধীদের কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তার এ মন্তব্য ভারতের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ নিয়ে নিয়মিত উসকানিমূলক ও হঠকারী মন্তব্য করে চলেছেন বিজেপি নেতারা। সম্প্রতি বিজেপি নেতা ও আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, প্রতিবেশী দেশের সংকটের স্থায়ী সমাধান কেবল ‘অস্ত্রোপচারের’ মাধ্যমেই সম্ভব।
তবে এবার বাংলাদেশ প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কোনো রাখঢাক না রেখে গাজায় চলমান ইসরাইলি গণহত্যার উদাহরণ টেনে এনেছেন। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিসকে শুভেন্দু হুমকির সুরে বলেন, ইসরাইল গাজাকে যেভাবে শিক্ষা দিয়েছে, সেভাবেই বাংলাদেশকেও শিক্ষা দেয়া উচিত।
তার কথায়, ‘সবক শিখানা চাহিয়ে। জ্যায়সে ইসরাইল শিখায়া গাজা মে। উস তারিকা সে।’ ভারত ১০০ কোটি হিন্দুর দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, হামারি ভারত কি ছ ক্রোর হিন্দু। দেশকা হিন্দু হিত মে চল রাহা হ্যায় সরকার। সবক শিখানা চাহিয়ে (বাংলাদেশকে)। জ্যাইসে অপারেশন সিন্দুর মে পাকিস্তান কো হাম লোগোনে শিখায়া।
বিজেপি নেতার এ উসকানিমূলক মন্তব্য তীব্র সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে পড়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছে, বিজেপি ঘৃণা ও অসহিষ্ণুতাকে একটি শিল্পের আকার দিয়েছে। তাদের বিষাক্ত মুখ শুভেন্দু অধিকারী তার ফ্যাসিবাদী মনোভাবকে তুলে ধরেছেন। গণহত্যার মত ইস্যুকে উসকে দিয়ে তিনি বলেছেন, ভারতকে অবশ্যই মুসলমানদের একটি সবক শেখাতে হবে যেমন ইসরাইল গাজায় শিখিয়েছিল।
তৃণমূল কংগ্রেস শুভেন্দুর মন্তব্যকে ‘নগ্ন ঘৃণামূলক বক্তব্য, গণহত্যা ও শুদ্ধিকরণের রক্তপিপাসু আহ্বান’ বলে অভিহিত করে আরও বলেছে, ‘কোনো এফআইআর নেই, কোনো গ্রেফতার নেই, কোনো মামলা নেই। এ ঘোষিত হিটলারের ওপর কোনো ইউএপিএ চাপানো হয়নি।
কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বলও বলেছেন, শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের জন্য ‘কোনো এফআইআর হয়নি, কোনো গ্রেফতার হয়নি, কোনো মামলা হয়নি, কোনোও ইউএপিএ হয়নি’।
তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ এবং রাজ্যসভায় দলের উপনেতা সাগরিকা ঘোষ পোস্ট করে বলেছেন, ‘বিজেপির বাংলার ‘মুখ’ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গাজার মতো অভিযান চায়। সে বলে যে নরেন্দ্র মোদী সরকার কেবল ‘হিন্দুদের’ জন্য। তবে বাংলায় বিভাজন ও শাসনের নোংরা রাজনীতি কাজ করবে না।
এর আগে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশে হিন্দু যুবক দীপু চন্দ্র দাসের হত্যার প্রতিবাদে কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাসের সামনে কয়েকশ’ নেতাকর্মী ও হিন্দু সাধু-সন্ন্যাসীকে নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে হাজির হন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেদিনও উসকানি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা একশ কোটি হিন্দু, বাংলাদেশের দেড়-দু কোটি হিন্দুর জন্য লড়ব।’ তথ্যসূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড ও বিবিসি
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































