
ছবি : আপন দেশ
দীর্ঘ সাড়ে তিন দশক পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি ভবনের ১৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এটি বিরতিহীন ভাবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে।
এদিন আগে থেকেই কেন্দ্রের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেন ভোটাররা। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর নির্বাচন হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসব আমেজ বিরাজ করছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, জীবনে প্রথমবার ভোট দিচ্ছি। দিনটা আমাদের জন্য খুবই আনন্দের। এভাবে প্রতিবছর রাকসু নির্বাচন হওয়া উচিত। কারণ নির্বাচন ঘীরে গত কয়েকদিন ধরে উৎসবের মধ্যে রয়েছি আমরা। আশা করবো, যারা বিজয়ী হবেন, তারা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করবেন।
নির্বাচনের জন্য সকালেই কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট বাক্স পাঠানো হয়। এদিন সকাল ৭টা ১৫ মিনিটের দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি বিতরণ শুরু হয়। এসময় প্রিজাইডিং অফিসারদের কাছে, হালনাগাদ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বক্স, ওএমআর যুক্ত ব্যালট পেপার, অমোচনীয় কালীসহ অন্যান্য নির্বাচন সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
রাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ২৮ হাজার ৯০১ জন, যার মধ্যে ৩৯ দশমিক ১ শতাংশ নারী এবং ৬০ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ। মোট ৮৬০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় রাকসুর ২৩ পদে ৩০৫ জন, সিনেটের ৫ পদে ৫৮ জন এবং ১৭টি হল সংসদের ২৫৫ পদে ৫৫৫ জন প্রার্থী লড়াই করছেন।
ভোটগ্রহণ হবে ৯টি একাডেমিক ভবনে স্থাপিত ১৭টি কেন্দ্রে। ভোট পরিচালনায় থাকবেন ২১২ জন শিক্ষক। এর মধ্যে ১৭ জন প্রিসাইডিং অফিসার এবং বাকিরা সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া ৯১ জন পোলিং অফিসার দায়িত্বে থাকবেন।
আরও পড়ুন<<>>চাকসুর ভিপি-জিএস শিবিরের, এজিএস ছাত্রদলের
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয়েছে দুই হাজার পুলিশ সদস্য, ৬ প্লাটুন বিজিবি ও ১২ প্লাটুন র্যাব। সব ভোটকেন্দ্রে থাকবে সিসিটিভি নজরদারি এবং স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার করা হবে।
মোট ৯টি ভবনের ১৭টি কেন্দ্রের ৯৯০ বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তত দুই হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। ভোটগ্রহণ শেষে রাকসু কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়ে ভোট গণনা এবং কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
রাকসুর ইতিহাস বলছে, একসময় বামপন্থি সংগঠগুলোর ব্যাপক অধিপত্য ছিল এই ক্যাম্পাসজুড়ে। ছাত্র ইউনিয়ন, জাসদ ছাত্রলীগ, ছাত্রমৈত্রীর মত সংগঠনের নেতারা সেখানে শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আশির দশক পর্যন্ত বামপন্থিদের সঙ্গে সমানতালে পাল্লা দিয়ে সেখানে রাজনীতি করেছে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। বরং সেই তুলনায় তখন পিছিয়ে ছিল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। নব্বইয়ের দশকে শেষ নির্বাচনে তারা গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে জয় পেয়েছিল।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রভাবও শুরু হয়েছিল তখন থেকেই। তবে তা নির্বাচনে অংশগ্রহণেই সীমাবদ্ধ ছিল। রাকসুতে নেতৃত্বের স্বাদ তারা কখনও পায়নি।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।