Apan Desh | আপন দেশ

রাঙামাটিতে কনে-কাজীর যোগসাজশে কাবিন জালিয়াতি, তদন্তে পিবিআই

নোয়াখালী প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ১৭:৪৮, ১৩ জুলাই ২০২৫

রাঙামাটিতে কনে-কাজীর যোগসাজশে কাবিন জালিয়াতি, তদন্তে পিবিআই

ফাইল ছবি

পার্বত্য জেলা রাঙামাটির নানিয়ারচরে কনের পরিবারের সঙ্গে কাজীর যোগসাজশে কাবিননামা জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে বরপক্ষ গত ১ জুন নোয়াখালীর একটি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত করছে নোয়াখালী জেলা পুলিশের বিশেষ ইউনিট পিবিআই।

কাবিন জালিয়াতির ঘটনাটি ঘটেছে কনের বাড়ী রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলায়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৯ সালের ৩০ জুন নানিয়ারচরের ইসলামপুর গ্রামের ময়না আক্তার খাদিজা ও নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার মো. রিয়াদ হোসেনের মধ্যে সামাজিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়। পরবর্তীতে পারিবারিক কলহের জেরে বর ২০২২ সালে ওমানে পাড়ি জমান। এরপর থেকে দাম্পত্য সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ২০২৪ সালের ৬ মে কনে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বরকে তালাক দেন। যদিও বর জানান—তিনি কোনো তালাকনামা পাননি।

তালাকের এক মাস পর ৯ জুন কনে রাঙামাটি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বর রিয়াদ, তার ভাই ও মাকে আসামি করে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেন। বরপক্ষের দাবি, এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়রানি।

বিষয়টি ঘোলাটে হয় তখন, যখন বরপক্ষ আদালতে জমা দেয়া কাবিননামার কপি দেখে বিস্মিত হয়। আসল কাবিননামা অনুসারে বিয়ের দিনই চার লাখ টাকা দেনমোহর অলংকার বাবত পরিশোধ করা হয়। তা রেজিস্ট্রার বইয়ে লেখা রয়েছে। কিন্তু আদালতে জমা দেয়া কপিতে দেখানো হয়, দেনমোহরের উসুল হয়েছে মাত্র ৫০ হাজার টাকা।

এছাড়া কনের নাম ও বয়স নিয়েও রয়েছে বিভ্রান্তি। এক কপিতে কনের নাম ময়না আক্তার খাদিজা, আরেকটিতে মোসা. ময়না আক্তার কিংবা খাদিজা আক্তার। বয়সও কোথাও ২০০০, কোথাও ২০০২ সাল উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলায় অভিযুক্ত ৯ জনের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় কাজী মাওলানা ইসমাইল হোসেন। অন্যরা হলেন, কনে ময়না আক্তার খাদিজা, কনের ভাই রমজান আলী, মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. শহীদুল ইসলাম, কাজী মাওলানা ইসমাইল হোসেন, মো. আলমগীর, মো. বাবুল খাঁ, মোসা. আমেনা বেগম, মো. কালাম ও মো. নাছির খাঁ। 

বরপক্ষের অভিযোগ, কাজী মাওলানা ইসমাইল হোসেন অতীতেও একাধিক কাবিন জালিয়াতিতে জড়িত ছিলেন ও সামাজিকভাবে দণ্ডিত হয়েছেন। তবুও তিনি এ ধরনের অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন।

বরপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম জানান, পিবিআই মামলাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে। কাবিননামা ও অন্যান্য দালিলিক প্রমাণ থেকে স্পষ্টতই প্রতারণার চিত্র ফুটে উঠেছে। আশা করছি, তদন্তে জালিয়াতির বিষয়টি নিশ্চিত হবে ও আসামিরা শাস্তির মুখোমুখি হবেন।

পিবিআই নোয়াখালীর তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. শামীম সংক্ষিপ্তভাবে জানান, আমরা তদন্ত শুরু করেছি। সব দালিলিক তথ্য যাচাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়