
ছবি: আপন দেশ
বিএফডিসিতে ‘৩ আগস্ট চলচ্চিত্রের কালোদিবস’ পালন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী চলচ্চিত্র পরিষদ। ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের সময় যারা গণহত্যার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে বিচার ও রাষ্ট্রীয়ভাবে বর্জনের দাবিতে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
২০২৪ সালের ২ আগস্ট বিটিভি চত্বরে এবং ৩ আগস্ট বিএফডিসিতে কিছু শিল্পী ও কলাকুশলী ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। তাদের সে অবস্থানকে ‘জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা’ হিসেবে অভিহিত করে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
রোববার (০৩ আগস্ট) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী চলচ্চিত্র পরিষদ এ প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনের আয়োজন করে। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন দুই শতাধিক চলচ্চিত্রকর্মী। এদিন তারা ‘জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতাকারী’ শিল্পীদের বিচারের দাবি জানান।
গত বছর জুলাই মাসের শুরুতে ছাত্রআন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলন চলাকালে, ২ আগস্ট বিটিভি ও ৩ আগস্ট বিএফডিসিতে কিছু চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্পী-কলাকুশলী একত্রিত হন। তারা তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে অবস্থান নেন। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কথা বলেন। তাদের এ অবস্থান ছিল গণহত্যাকে সমর্থন করার শামিল।
আরও পড়ুন>>>অভিনয় ছেড়ে দিলে সাংবাদিকতা করবেন মোশাররফ করিম
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কালোদিবস উদ্যাপন কমিটির আহবায়ক, চলচ্চিত্র পরিচালক বদিউল আলম খোকন। সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্যসচিব ও জাসাস কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটির সদস্য, চলচ্চিত্র পরিচালক নাসির উদ্দিন মিলন।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক, মেগাস্টার আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল। তিনি বলেন, গণহত্যাকে কেউ সমর্থন করতে পারে না। কিন্তু কিছু দলকানা শিল্পী-কলাকুশলী সেটাই করেছিল। তারা লাশের উপর দাঁড়িয়ে উল্লাস করেছিল। বিএফডিসির বর্তমান এমডি একজন ফ্যাসিবাদী দোসর। তাকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। তা না হলে চলচ্চিত্র অঙ্গন তাকে বর্জন করবে।
জুলাই গণহত্যার ইন্ধনদাতা শিল্পী-কলাকুশলীদের বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, জাসাস জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কবি ও অভিনেতা এবিএম সোহেল রশিদ, চলচ্চিত্র পরিচালক হানিফ রেজা মিলন, জাইএ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হান্নান মজুমদার, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক মো. আরমান, চলচ্চিত্র পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, চলচ্চিত্র পরিচালক মনজুরুল ইসলাম মেঘ, জাইএ এর সাধারণ সম্পাদক জিএম সাঈদ, চিত্রনায়ক আবীর পারভেজ, অভিনেত্রী রোকেয়া সুলতানা কেয়া, চলচ্চিত্র ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম, চলচ্চিত্র কর্মী আজিজুল হক খোকা।
চলচ্চিত্রের কালোদিবস অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মেগাস্টার আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল বলেন, শুধু মুক্তচিন্তার মানুষ নয়, কেউই গণহত্যা সমর্থন করতে পারে না। কিন্তু কিছু দলকানা শিল্পী নামের কলঙ্ক দুর্নীতি গ্রস্ত দানব-দানবী নটকবাজ ফ্যাসিস্ট হাসিনার আনুকূল্য পাওয়ার আশায় আমাদের সন্তানদের লাশের উপর দাঁড়িয়ে ৩৩ জুলাই বিটিভিতে ও ৩৪ জুলাই এফডিসি গেইটে উল্লাস উৎসব করেছিলো। সে কলঙ্কময় ঘৃণিত দিন আজ আমরা সকল জুলাই শহিদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে ও সেদিনের দানব-দানবী'র প্রতি নিন্দা জানাই। আমাদের দাবি রাষ্ট্রীয় বর্জন তালিকায় সেদিনের সকলকে অন্তর্ভুক্ত করলে শহিদ আত্মারা শান্তি পাবে।
উজ্জ্বল আরও বলেন, বিএফডিসির এমডি পদে নিয়োগ পেয়েছে ফ্যাসিবাদের দোসর। অবিলম্বে তাকে অপসারণ করতে হবে। নাহলে যে ভাবে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন করেছে ছাত্রজনতা ঠিক একই ভাবে চলচ্চিত্রের কলাকুশলীরা ফ্যাসিবাদের দোসর এমডিকে বয়কট করবে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।