
ছবি: আপন দেশ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে জুলাই যোদ্ধা শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রদল। হামলার শিকার ভুক্তভোগীকে বাঁচাতে এসে আহত হয়েছেন জবির দুই শিক্ষক ও বাংলাদেশ বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) জবি শাখার তিন নেতাকর্মী। ছাত্রদলের দাবি অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের পদধারী নেতা।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শহীদ সাজিদ অ্যাকাডেমিক ভবনের নিচে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রফিক বিন সাদেক রেসাদকে দুপুরে ওই ভবনের নিচে আটকায় ছাত্রদল। তারা তাকে ছাত্রলীগের নেতা আখ্যা দিয়ে মারধর শুরু করে। এ সময় রেসাদকে রক্ষা করতে গেলে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক ও ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ড. এ কে এম রিফাত হাসান ও সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলামও ছাত্রদল কর্মীদের গালাগাল ও হামলার শিকার হন।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জুলাই যোদ্ধা ও বাগছাসের তিন নেতাকর্মী—সভাপতি মো. ফয়সাল মুরাদ, মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস হাসান ও যুগ্ম-আহবায়ক ফারুক—কে একইভাবে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মারধর করে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। আহত সবাইকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বাগছাস জবি শাখার আহবায়ক মো. ফয়সাল মুরাদ বলেন, শহীদ সাজিদ ভবনের নিচে বাগছাসের যুগ্ম আহবায়ক ফারুকের ওপর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান ও সদস্য সচিব শামসুল আরেফিনের নেতৃত্বে হামলা হয়। আমি বিষয়টি জানাতে গিয়ে বলি, ফারুক জুলাই আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী। তিনি ১৯ জুলাইয়ের ঘটনার সময় মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছিলেন। তখন শামসুলের নেতৃত্বে আমাকেও মারধর করা হয়। পরে গুলিবিদ্ধ জুলাই যোদ্ধা ফেরদৌস হাসানকেও ঘিরে পিটিয়েছে। এমনকি আমাদের রক্ষা করতে আসা শিক্ষকদের ওপরও হামলা চালানো হয়।
হামলার নিন্দা জানিয়ে মুরাদ বলে, ছাত্রদলের যারা আমার ও আমার জুলাই সহযোদ্ধাদের উপর যারা হামলা চালিয়েছে তাদের বিচার করতে হবে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
হামলার শিকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ ও জবি বাগছাসের মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস শেখ বলেন, আমাদের তিন জুলাই যোদ্ধাকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে জবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন ও যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে মারধর করা হয়। পরে তাকে রক্ষা করতে গেলে আমাদের ওপরও হামলা চালানো হয়। এসময় ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. রিফাত হাসান, সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম ও বাগছাসের নেতাদেরও মারধর করা হয়। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এ বিষয়ে জবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা প্রবেশ করেছে—এমন তথ্য আমরা পাই। তারা ফেসবুকে বিভিন্ন সময়ে পোস্ট দিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকার ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে সাজিদ নামে একজন এমন পোস্ট দিয়েছিল ও ক্যাম্পাসে এসেছিল। তাদের এ সংগঠিত হওয়াকে ঘিরেই আমরা প্রতিক্রিয়া জানাই। আজ যারা হামলার শিকার হয়েছেন, তারা উল্টো আমাদের বিরুদ্ধেই মব তৈরি করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। শিক্ষক সমিতির সভাপতির মাধ্যমে বিষয়টি প্রাথমিকভাবে সুরাহা করা হয়েছে। একজন সিনিয়র অধ্যাপকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হামলার শিকার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক ও ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ড. রিফাত হাসান মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।