Apan Desh | আপন দেশ

টাঙ্গাইলে মামলার বাদীকে থানা থেকে তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ 

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:৫৮, ১২ জুন ২০২৫

টাঙ্গাইলে মামলার বাদীকে থানা থেকে তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ 

ছবি: আপন দেশ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় হতদরিদ্র একটি পরিবারের সদস্যদের ওপর বারবার হামলার ঘটনায় মামলা করতে গেলে থানায় অপমান ও হুমকির শিকার হয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগ রয়েছে, থানার এসআই মো. সুমন বাদীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে থানা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভূঞাপুর উপজেলার অলোয়া ইউনিয়নের কাগমারীপাড়া গ্রামের মোছা. লাকি আক্তার। তিনি টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপারের কাছে দোষী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।

ঘটনার সূত্রপাত ৯ জুন। ওইদিন বাড়ির টিউবওয়েলের পানি জমিতে পড়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় দুই প্রতিবেশীর মধ্যে। হতদরিদ্র মো. রাব্বী ও জমির মালিক আকতার হোসেনের মধ্যে এ বিরোধ তৈরি হয়। এর জের ধরে আকতার হোসেনের ভাই, ভাতিজা ও আরও ১০-১২ জন মিলে রাব্বীর বাড়িতে ঢুকে তাকে ও তার মা লাভলীকে মারধর করে। এসময় লাভলীর পড়নের কাপড় ছিঁড়ে ফেলা হয়। তার গলা থেকে লুট করা হয় স্বর্ণের চেইন।  ১০ জুন স্থানীয় লিপি ভূঞার বাড়িতে সালিশ বসে। সালিশ চলাকালে আকতার হোসেনের লোকজন আবারও হামলা চালায়। মারধরের শিকার হন লাভলী, শিল্পী, লিমন, রাব্বী, হাসমত, আলমগীর ও জাহাঙ্গীর।

আরও পড়ুন>>>নিখোঁজের ৮ দিন পর ব্যবসায়ীর ৬ টুকরা মরদেহ উদ্ধার

সেইসময় মোছা. লাকি আক্তারকেও মারধর করা হয়। তার গলার এক ভরি স্বর্ণের চেইন ও ব্যাগে থাকা সাড়ে তিন হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। ভীতসন্ত্রস্ত উপস্থিত মাতব্বররা লিপি ভূঞার ঘরে আশ্রয় নেন। ঘটনার পর মোছা. লাকি আক্তার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। 

পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এসআই সুমনের নেতৃত্বে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, তিনি অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে কাজ করেন। আশ্রিতদের সহযোগিতা না করে উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দিতে বলেন আকতার হোসেনকে। অবস্থা বেগতিক দেখে তিনি উভয় পক্ষকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেন।

এরপর ১১ জুন পুনরায় হামলা চালানো হয়। রাব্বী ও তার মা আবার মারধরের শিকার হন। লুট হয় ১৬০০ টাকা। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে রাব্বীর অবস্থা খারাপ হলে তাকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। ১২ জুন রাব্বীর মা লাভলী ও মোছা. লাকি আক্তার ভূঞাপুর থানায় অভিযোগ করতে গেলে তারা থানা থেকে অপমানজনক আচরণের শিকার হন।

এসআই সুমন তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। জোর করে থানা থেকে বের করে দেন। ভুক্তভোগীরা জানান, ওসি’র সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও সুমন তাদের বাধা দেন। এ অভিযোগ পুলিশ সুপার ছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইজিপি বরাবরও পাঠানো হয়েছে।

এসআই সুমন বলেন, তিনি উভয় পক্ষকে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন। এক ঘটনায় একাধিক মামলা করা যাবে না — এমন পরামর্শই তিনি দিয়েছেন। তবে থানায় অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

ভূঞাপুর থানার ওসি এ কে এম রেজাউল করিম জানান, ৯৯৯ কলের পর ব্যবস্থা নেও হয়েছে। উভয়পক্ষকে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। এসআই সুমন একজন সৎ অফিসার। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ বিশ্বাসযোগ্য নয়। তবে যাঁরা অভিযোগ করেছেন, তাদের পরিবারও সমস্যাসৃষ্টিকারী বলে দাবি করেন ওসি।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, অন্যায় করলে কেউই পার পাবে না। অভিযোগপত্র হাতে পেলেই যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়