Apan Desh | আপন দেশ

দুর্নীতিবাজদের আর মানুষ ক্ষমতায় আনবে না: ফয়জুল করীম

নিজস্ব প্রতিবদেক

প্রকাশিত: ১৮:৩৩, ২৮ জুন ২০২৫

আপডেট: ২২:০৩, ২৮ জুন ২০২৫

দুর্নীতিবাজদের আর মানুষ ক্ষমতায় আনবে না: ফয়জুল করীম

ছবি: আপন দেশ

দেশের মানুষ আর দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ ও খুনিদের ক্ষমতায় আনবে না। জনগণ তাদের অতীতের ভুল ও ব্যর্থতা ভুলে যায়নি। এখন তারা সত্যিকারের পরিবর্তন ও ন্যায় বিচার চায়। এ মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি বারবার ক্ষমতায় এসে তাদের ইশতেহার বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। এখন তারা বলছে, সরকার গঠন করে সংস্কার করবে। কিন্তু কে তাদের এ ক্ষমতায় যাওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছে? জনগণ তাদের অতীতের ব্যর্থতা ভুলে যায়নি। পিআর সিস্টেম ছাড়া জাতীয় সরকার গঠন অসম্ভব। জাতীয় সরকারের দাবি বিএনপির, অথচ তারা পিআর নির্বাচনের কথা মানছে না। আমি বুঝি না কেন?

শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ফয়জুল করীম বলেন, জাতীয় সরকার মানে সর্বদলীয় অংশগ্রহণমূলক সরকার। আর একমাত্র পিআর পদ্ধতির মাধ্যমেই সব দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব। বিএনপি যদি সত্যিই জাতীয় সরকার গঠন করতে চায়, তাহলে তাদের অবশ্যই পিআর পদ্ধতির নির্বাচন মেনে নিতে হবে। 

তিনি প্রশ্ন রাখেন, বিএনপি বলে সরকারে গিয়ে সংস্কার করবে। কিন্তু কে আপনাদের গ্যারান্টি দিয়েছে যে আপনারাই ক্ষমতায় যাবেন? অতীতে তো আপনারা ক্ষমতায় গিয়ে ইশতেহার বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ১৯৯১ থেকে ’৯৬ পর্যন্ত বিএনপি যে ব্যর্থতা দেখিয়েছে, তার ফলেই তারা ’৯৬ সালে ক্ষমতায় আসতে পারেনি। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত দেশের অবস্থা কী করেছিল, তা জনগণ দেখেছে। ফলে ২০০৮ সালেও জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।

২০০১ সালের নির্বাচনী ইশতেহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সে সময় বিএনপি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার ১০ শতাংশও তারা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। এমনকি ইশতেহারের প্রথম দফা প্রতিশ্রুতিও পালন করেনি। আমি বলতে পারি না আগামীতে কে ক্ষমতায় যাবে, কে যাবে না। কিন্তু এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি—বাংলাদেশের মানুষ আর দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, খুনিদের ক্ষমতায় আনবে না।

ফয়জুল করীম বলেন, মানুষ জীবন দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে—চাঁদাবাজি, খুন, লুটপাট, দখলদারিত্বের জন্য নয়। এ দেশের মানুষ স্বাধীনতা চেয়েছে শান্তির জন্য, মুক্তির জন্য, ন্যায়ের জন্য। আমার বাংলাদেশে কেউ খোলা আকাশের নিচে ঘুমাবে না, কেউ অভুক্ত থাকবে না—এ ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। আর সে চেতনায় বিশ্বাস রেখেই আমরা চাই একটি স্বচ্ছ, ন্যায়ভিত্তিক, অংশগ্রহণমূলক রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে উঠুক।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম কোরআন ও সুন্নাহর আইন বাস্তবায়নের জন্য ছিল। আমরা ভারতের গোলামিতে ভোগিনি। কিন্তু আমাদের সংগ্রামে বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতা লাভ করে, তখন আমাদের জাতির মর্যাদা ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের মানুষ নিজেই আইন প্রণয়ন করবে, সংসদ পরিচালনা করবে। আমরা নিজেদের পায়ে দাঁড়াবো।

তিনি বলেন, আমরা যদি একমাত্র মুনাফিকি করে থাকি, তাহলে জাতির মধ্যে নিরপেক্ষতা হারাবে। মুখের কথা ও কাজের মধ্যে মিল থাকতে হবে। আমি কসম করে বলতে পারি, আগামীতে ক্ষমতায় যাবে ইসলাম। কোন সন্দেহ নেই। যদি মুনাফিকি করি, তাহলে দেশের মানুষ সচেতন হয়ে উঠবে – তারা জ্ঞানী হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ—রিকশাওয়ালা, ঠেলাওয়ালা, কুলি-মজুর—এতটাই সচেতন যে তাদের কথা শুনলে আমরা অবাক হয়ে যাই। আজ এ জাতি জেগে উঠেছে, আর তারা জানে কী চায়।

তিনি আহবান জানিয়ে বলেন, যদি আমরা মুনাফিকি না করি, যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি, তবে এ বাংলাদেশে ইসলামের নামে একটি ভোটবাক্স স্থাপন করা সম্ভব হবে, যেখান থেকে ঘরের পর ঘর থেকে ইসলামের শক্তি ছড়িয়ে পড়বে। সেই শক্তি হবে মিসাইলের মতো, যা দুশমনদের ধ্বংস করে দেবে—যেমনটা ইসরায়েল ও আমেরিকা ইরানে আক্রমণ করে বুঝেছিল, কী ভুল করেছে।

তিনি আরও বলেন, এ ঐক্য যদি গড়ে ওঠে, যদি আমরা ক্ষমতার লোভ সংবরণ করে বলি, ‘আমি নয়, ইসলামকে ক্ষমতায় নিতে চাই, কোরআন ও সুন্নাহকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই’, তাহলে সে দিন খুব দূরে নয়—আমি চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি, সংসদে উচ্চারিত হবে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, কোরআন-সুন্নাহর আলোচনায় মুখর হবে জাতীয় রাজনীতি।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়