Apan Desh | আপন দেশ

পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন মানবে না দেশের মানুষ: পরওয়ার

নিজস্ব প্রতিবদেক

প্রকাশিত: ১৮:০০, ২৮ জুন ২০২৫

আপডেট: ২০:৪২, ২৮ জুন ২০২৫

পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন মানবে না দেশের মানুষ: পরওয়ার

ছবি ভিডিও থেকে নেয়া।

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক (পিআর) পদ্ধতি ছাড়া দেশের জনগণ কোনো নির্বাচন মেনে নেবে না। এ মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে যে আন্দোলন, যে সংগ্রাম হয়েছে—তা ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না।

শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

গোলাম পরওয়ার বলেন, বাংলার মানুষ পিআর পদ্ধতি ছাড়া আর কোনো নির্বাচন মেনে নেবে না। প্রধান উপদেষ্টার কিছু কিছু ভূমিকা নিয়ে জাতির মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই—আপনি সোজা থাকুন। স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে দিতে হবে। নির্বাচন কমিশন ও সরকার সবাইকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আজকের এ দিনটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক দিন। কেননা মুসলিম উম্মাহর প্রতিনিধিত্বকারী সব ইসলামী দল ও ব্যক্তিত্ব ভিন্নমত থাকা সত্ত্বেও একত্রিত হয়েছেন। পীর চরমোনাই সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিমের নেতৃত্বে এ ঐক্যের সূচনা হয়েছে। যা এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।

তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনুসকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি ন্যাশনাল কনসেন্সাস কমিশনের চেয়ারম্যান। নির্বাচন কমিশনের প্রধানসহ সকলকে বলছি—এ জনসমুদ্র থেকে আপনাদের উদ্দেশ্যে একটি স্পষ্ট বার্তা যাচ্ছে, পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন এ দেশের জনগণ মেনে নেবে না। আপনারা জাতির সামনে নিরপেক্ষ থাকার যে অঙ্গীকার করেছেন, তা পালন করুন।

তিনি আরও বলেন, আমরা কোনো দল বা গোষ্ঠীর পক্ষে পক্ষপাতিত্ব চাই না। আমরা চাই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। তা না হলে জনগণ আর মেনে নেবে না।

গোলাম পরওয়ার বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) জাতির উদ্দেশ্যে যা বলবেন, আলোচনায় বা কোনো দলের কাছে গিয়ে তা ভুলে গেলে চলবে না। এতে নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। আপনি সোজা থাকুন।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সংলাপে বসতে পারেন, এটা আপনার অধিকার। কিন্তু একই বিষয়ে এক জায়গায় কিছু বলা, আরেক জায়গায় মত বদলানো—এটি জাতিকে বিভ্রান্ত করে। আপনাকে এখনই সকল দলের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় বসে বলতে হবে, কী অসুবিধা রয়েছে ও সবাই মিলে কিভাবে সমাধানে পৌঁছানো যায়।

আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন আট-দশ বছর পর নয়, এখনই হবে। এ সময়ের মধ্যেই আপনাকে নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে। মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের দাবি জাতির পক্ষ থেকে উচ্চকিত হয়েছে। সে বিচার দ্রুত ও দৃশ্যমান করতে হবে।

ভারতের ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, দিল্লিতে বসে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ভারতের সেবাদাসে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করছেন। নির্বাচনের আগে এসব ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে।

গোলাম পরওয়ার বলেন, বর্তমান ফ্যাসিবাদী কাঠামো ভেঙে একটি নতুন গণতান্ত্রিক কাঠামোর প্রয়োজন রয়েছে। মৌলিক সংস্কার ছাড়া এ রাষ্ট্রে সুশাসন ও মানবিক বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। আমরা নতুন আরেকজন ফ্যাসিস্ট বা একনায়কের জন্ম চাই না।

তিনি আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের দাবিও জানান। প্রবাসী এক কোটি ১০ লাখ ভোটারের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়ে বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে দিতে হবে। জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র ১ জুলাই থেকে ৮ আগস্টের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে।

 সমাবেশে তিনি জানান, জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান চরমোনাইকে ও আন্দোলনরত সব দেশবাসীকে সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি চরমোনাইয়ের পীরের ঐক্য প্রতিষ্ঠায় উদার ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, এ ঐক্যই ভবিষ্যতের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রধান প্রতিরোধ হবে।

পরওয়ার বলেন, গ্রামে-গঞ্জে, শহরে, বন্দর-নগরে ইসলামী মূল্যবোধ ভিত্তিক ঐক্যের ঢেউ উঠেছে। মুসলিম উম্মাহর নেতৃত্বদানে ইসলামী দলগুলোর ঐক্য দেখে মানুষ আশাবাদী। আসুন—ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে, ন্যায়বিচারভিত্তিক একটি বৈষম্যহীন মানবিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ হই।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়