
হুমায়ূন আহমেদ
হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার, গীতিকার, চিত্রনাট্যকার, চলচ্চিত্র নির্মাতা এছাড়াও আরও কিছু ক্ষেত্রে তার পদচারনা ছিলো যা অনেকেরই অজানা তা হলো, জাদু ও চিত্রকর্ম।
হুমায়ূন আহমেদের অন্ধ ভক্ত আমি নই কিন্তু তার অনেক বই পড়েছি, তার নাটক সিনেমা দেখে দেখেই বড় হয়েছি। আর বাংলা সাহিত্যে, সংস্কৃতির বিভিন্ন ধারায় তার বিশাল ও বিশেষ অবদান অস্বীকার করার বিন্দু মাত্র অবকাশ নেই। হুমায়ূন আহমেদের সব বইয়ের মান যে অনেক ভালো আমি তা বলবো না কিন্তু এত বিশাল এক জনগোষ্ঠিকে বই পড়ার প্রতি টেনে আনার কাজটি বাংলাদেশের আর কেউ-ই করতে পারেন নি।
কিশোর বয়সে আর দশ জনের মত হিমু চরিত্রের প্রেমে আমিও পড়েছি কিন্তু সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকবার সময়ই তা চলে গেছে। কিন্তু তার বিভিন্ন কর্মযজ্ঞ চোখ এড়ায়নি। 'ময়ূরাক্ষী' ও 'জোছনা ও জননীর গল্প' তার লেখা প্রিয় দুটি উপন্যাস।
বাংলাদেশের আর কোন সাহিত্যিক সাহিত্যে ও সংস্কৃতির এত দিকে কাজ করেছেন কিনা আমার জানা নেই। আমার মতে এখন পর্যন্ত হুমায়ূন আহমেদের "কোথাও কেউ নেই" বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোড়িত নাটক।
উনি শুধু লিখেই যাননি, একেকটি চরিত্র তৈরি করে গেছেন, মিসির আলি, হিমু, শুভ্র, বাকের ভাই যা মানুষ একেকটি চরিত্রে নিজেকে খুঁজে নিয়েছে কিংবা নিজেকে সেই চরিত্রে বসিয়েছে, এটি একজন সাহিত্যিকের অনেক বড় এক সফলতা।
হুমায়ূন আহমেদের 'শ্রাবণ মেঘের দিন' তার তৈরি সবচেয়ে প্রিয় চলচ্চিত্র, মধুমিতায় দেখেছিলাম এখনো মনে আছে। এছাড়াও শঙ্খনীল কারাগার ভালো লেগেছিলো যদিও সেটা তার তৈরি নয়।
হুমায়ূন আহমেদের যে কাজটা আমার অনেক ভালো লেগেছে তা হলো মানুষের জন্য বিশাল এক ভাবনা। বাংলাদেশে একটা সময় টিভি নাটকে নির্মল বিনোদনের যে আকাল পরেছিলো তিনি সেটা একাই দূর করেছেন। যদিও সব নাটকে একই মুখ আর একই রকম চরিত্রে একঘেয়েমী চলে এসেছিলো তবুও জটিলতাহীন বিনোদনের অভাব ছিলো না। আমার এখনো অনেক নাটক দেখলে মনে হয় হুমায়ূন আহমেদের ধারার নাটক।
আজ ১৯ জুলাই, এ দিনে হুমায়ূন আহমেদ পৃথিবী আবার ছেড়ে চলে গেছেন কিন্তু আমি বিশ্বাস করি হুমায়ূন আহমেদ চিরঞ্জীব তার রেখে যাওয়া সৃষ্টিতে।
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।