
সংগৃহীত ছবি
রাজধানী ঢাকা এখন আন্দোলনের নগরী। প্রতিদিনই নতুন কোনো দাবিতে রাজপথে নামছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সড়ক অবরোধ, অবস্থান কর্মসূচি আর বিক্ষোভ যেন নিয়মিত চিত্র হয়ে উঠেছে। এক কথায়, দাবি আদায়ের জোরালো চেষ্টা চলছে সর্বত্র।
গত ৯ মাসে ঢাকায় হয়েছে পাঁচ শতাধিক খণ্ড খণ্ড আন্দোলন। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেয়ার পর থেকেই আন্দোলনের ঢল নেমেছে রাজধানীতে। দাবির চাপে এখন কার্যত অচল প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড। সচিবালয় থেকে শুরু করে ক্লাসরুম—সবখানেই থমকে আছে কাজ। রাজপথ দখলে নিচ্ছে ব্যানার-প্ল্যাকার্ড হাতে আন্দোলনকারীরা। ঢাকা যেন পরিণত হয়েছে দাবির শহরে।
রোববার (২৫ মে) রাজধনীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ-কর্মসূছি চলছে।
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদনের প্রতিবাদে সচিবালয়ের ভেতরে আজ দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। তারা এ অনুমোদিত খসড়াটিকে ‘নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। তা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির অধ্যাদেশ জারির প্রতিবাদে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে কর্মবিরতি কর্মসূচি চলছে। বেশির ভাগ শুল্ক-কর কর্মকর্তা-কর্মচারী এনবিআরের নিচতলায় প্রধান ফটকের পাশেই অবস্থান নেন। এতে বন্ধ রয়েছে প্রবেশের প্রধান দুই ফটক। আজ সকাল নয়টা থেকে এ পরিস্থিতি চলছে। এ কারণে এনবিআরের কার্যক্রম কার্যত বন্ধ আছে। কয়েক দিন ধরে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এ আন্দোলন চলছে।
আরও পড়ুন>>>>ছাত্রদল কর্মী রাফির হত্যাকারীকে গ্রেফতার দাবিতে বিক্ষোভ
এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনের সামনে আজ রোববারও চলছে অবস্থান কর্মসূচি। বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে বেলা ১১টা থেকে সেখানে অবস্থান নিয়েছেন তার সমর্থক ও করপোরেশনের বড় একটি অংশের কর্মচারীরা। এ কর্মসূচির কারণে গুরুত্বপূর্ণ এসব জায়গায় স্বাভাবিক কাজকর্ম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
অন্যদিন, সোমবার থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে যাচ্ছে প্রাথমিকের শিক্ষকেরা। বেতন গ্রেড নির্ধারণসহ তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন তারা। আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ জানিয়েছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। এ পর্যন্ত তারা অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করছিলেন। দাবি পূরণ না হওয়ায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী এবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়া হয়।
এদিকে ৭ দফা দাবিতে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনির্দিষ্টকালের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। রোববার (২৫ মে) ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কয়েকশ কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশ নিয়ে পঞ্চম দিনের মতো এ কর্মসূচি পালন করেন। গত ২১ মে থেকে শুরু হওয়া এ অবস্থান কর্মসূচি বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখে চলছে। কর্মকর্তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
আজ আন্দোলন করছে হেলথ অ্যাসোসিয়েশন। তারা ছয় দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।অবস্থান কর্মসূচিতে এক হাজারেরও বেশি আন্দোলনকারী অংশ নেয়। তারা সচিবালয় মেট্রো স্টেশনের কনকোর্স প্লাজায়ও অবস্থান নেন। যা মেট্রোরেলের সাধারণ যাত্রীদের জন্য ভোগান্তির কারণ হয়। সচিবালয় স্টেশনের কিছু গেট বন্ধ থাকায় যাত্রীদের অন্য গেট দিয়ে যাতায়াত করতে হয়, এতে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।