Apan Desh | আপন দেশ

ঢাকায় ভূমিকম্প হলে ৭২ হাজার ভবন ধসে পড়তে পারে

নিজস্ব প্রতিবদেক

প্রকাশিত: ১১:২৪, ৮ জানুয়ারি ২০২৫

ঢাকায় ভূমিকম্প হলে ৭২ হাজার ভবন ধসে পড়তে পারে

ফাইল ছবি

সাত দিনের ব্যবধানে দুইবার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে বাংলাদেশ। গত ৯০ দিনে দেশের আশপাশে ৫০টিরও বেশি মৃদু ও তীব্র ভূমিকম্প হয়েছে। গত ১৫ বছরে দেশে ১৫০টিরও বেশি ছোট-বড় ভূমিকম্প রেকর্ড হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব ঘটনা বড় ভূমিকম্পের সম্ভাবনার পূর্বাভাস।

বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্প হলে সবচেয়ে ভয়াবহ ক্ষতির শঙ্কা ঢাকা শহরে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাত্রা ৭ বা তার বেশি হলে ঢাকায় প্রায় ৭২ হাজার ভবন ধসে পড়তে পারে। এতে তৈরি হবে সাত কোটি টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ। অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ, গ্যাস ও বিদ্যুতের অব্যবস্থাপনাসহ দুর্বল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কারণে প্রাণহানি ও ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ছে বলে মনে করছেন গবেষকরা।

বিশ্বের ভূমিকম্প-প্রবণ ২০ শহরের তালিকায় রয়েছে ঢাকা। ঢাকার পাশাপাশি সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামও ভূমিকম্পে চরম ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে এ শহরগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।

গত ৭ জানুয়ারি রিখটার স্কেলে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্পে তিব্বতে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। তিব্বত ছাড়াও এ ভূমিকম্প বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল পর্যন্ত অনুভূত হয়। প্রধান ভূতাত্ত্বিক ফল্ট লাইনের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ার কারণে এ অঞ্চলে প্রায়ই ভূকম্পন ঘটে।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, ভূকম্পন-সক্রিয় এলাকায় অবস্থানরত বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী ভূমিকম্পের মুখোমুখি হতে পারে।

বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভারতীয় ও মিয়ানমারের টেকটোনিক প্লেট অতিক্রম করেছে। ইন্দো-অস্ট্রেলিয়ান প্লেটে অবস্থিত বাংলাদেশের উত্তরে হিমালয় ইউরেশিয়ান প্লেটে ও পূর্ব দিকে মিয়ানমার মাইক্রো প্লেটে যুক্ত। এসব প্লেট প্রতি বছর প্রায় ৫ সেন্টিমিটার স্থানচ্যুত হয়। শত শত বছর ধরে বড় ভূমিকম্প না হওয়ায় প্লেটগুলোতে শক্তি সঞ্চিত হচ্ছে।

ঢাকার বর্তমান ভবনগুলোর গঠন, অপরিকল্পিত গ্যাস ও বিদ্যুৎ লাইন ভূমিকম্পে ঝুঁকি কয়েক গুণ বাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বড় ভূমিকম্পে ঢাকা শহরে প্রায় ৭২ হাজার ভবন ধসে পড়তে পারে। এতে গড়ে উঠবে সাত কোটি টন কংক্রিটের স্তূপ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান বলছেন, ৭ মাত্রার ভূমিকম্প সীমান্ত এলাকায় হলেও ময়মনসিংহ, রংপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় ভয়াবহ ক্ষতি হতে পারে।

বুয়েটের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, ভূমিকম্পের ফলে ভবন ধসে বড় সংখ্যক মানুষ হতাহতের শঙ্কা রয়েছে। ইকুইপমেন্ট থাকলেও ভবন মেরামত বা পরিকল্পিত নির্মাণ নিশ্চিত না করলে বিপদ এড়ানো সম্ভব নয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবন মেরামত ও পরিকল্পিত নির্মাণ ছাড়া ফায়ার সার্ভিস বা সিভিল ডিফেন্সের উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। বড় ভূমিকম্প হলে লাখো প্রাণহানি ও সম্পদের ভয়াবহ ক্ষতি হবে। এখনই সচেতন উদ্যোগ নেয়া জরুরি।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়