Apan Desh | আপন দেশ

সংগীতজ্ঞ মুস্তাফা জামান আব্বাসী মারা গেছেন

বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:০৬, ১০ মে ২০২৫

আপডেট: ১২:২৬, ১০ মে ২০২৫

সংগীতজ্ঞ মুস্তাফা জামান আব্বাসী মারা গেছেন

ভাওয়াইয়া গানের রাজপুত্র খ্যাত বরেণ্য সংগীতশিল্পী, গবেষক ও লেখক মুস্তাফা জামান আব্বাসী

ভাওয়াইয়া গানের রাজপুত্র খ্যাত বরেণ্য সংগীতশিল্পী, গবেষক ও লেখক মুস্তাফা জামান আব্বাসী আর নেই। শনিবার (১০ মে) ভোরে বনানীর একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন তিনি। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। মুস্তাফা জামান আব্বাসী মেয়ে শারমিনী আব্বাসী তার বাবার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বাধ্যর্কজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন মুস্তাফা জামান আব্বাসী। গতকাল শুক্রবার হঠাৎ তার শারীরিক অসুস্থতা বেড়ে যায়। শ্বাসকষ্ট সমস্যা দেখা দিলে বনানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানেই চিকিৎসারত অবস্থায় ভোর সাড়ে পাঁচটায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
 
মুস্তাফা জামান আব্বাসী উপমহাদেশের এক প্রখ্যাত সংগীত পরিবারের সন্তান। বাবা আব্বাসউদ্দীন আহমদ পল্লিগীতির কিংবদন্তি শিল্পী। এ দেশের পল্লিসংগীতকে তিনিই প্রথম বিশ্বের দেশে দেশে জনপ্রিয় করেছেন। চাচা আব্দুল করিম ছিলেন পল্লিগীতি ও ভাওয়াইয়া–ভাটিয়ালির জনপ্রিয় শিল্পী। বড় ভাই মোস্তফা কামাল আইনবিশারদ। মোস্তফা কামালের মেয়ে নাশিদ কামালও একজন বরেণ্য শিল্পী। বোন ফেরদৌসী রহমান দেশের প্রথিতযশা বহুমাত্রিক প্রতিভার সংগীতজ্ঞ হিসেবে সমাদৃত।

মুস্তাফা জামান আব্বাসী ভারতের কোচবিহার জেলার বলরামপুর গ্রামে ১৯৩৬ সালের ৮ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব ও কৈশোরকাল কলকাতায় কাটে। এ পরিবারের সঙ্গে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতা ছিল। মুস্তাফা জামানের শিক্ষাজীবন কলকাতায় শুরু হয়। তিনি ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স এবং ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে এমএ পাস করেন।

আরও পড়ুন<<>> ফ্ল্যাট থেকে দুই বোনের মরদেহ উদ্ধার

তিনি সংগীসাধনা ও সাহিত্যচর্চায় নিজস্ব অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। সংগীতবিষয়ক গবেষণাতেও তিনি সিদ্ধহস্ত। তিনি বেতার ও টেলিভিশনে সংগীতবিষয়ক অনেক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন। পত্রপত্রিকাতে তিনি একজন সুখপাঠ্য কলাম লেখক হিসেবেও সুপরিচিত।

মুস্তাফা জামান আব্বাসী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স ও এমএ, হার্ভার্ড গ্রুপ থেকে মার্কেটিং অধ্যয়ন, দীর্ঘদিন শিল্পগোষ্ঠীর মহাব্যবস্থাপকসহ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন। ২৫টি দেশে ভাটিয়ালি, বিচ্ছেদি, ভাওয়াইয়া, চটকা, নজরুলসংগীত পরিবেশন করে খ্যাতি অর্জন করেন। দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে আন্তর্জাতিক লোকসংগীত সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব ও সংগীত পরিবেশন করেন। ইউনেসকোর ছত্রচ্ছায়ায় বাংলাদেশ ন্যাশনাল কমিটি অব মিউজিকের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ১১ বছর, একাধিকবার বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন সংগীতজ্ঞদের বিশ্ব অধিবেশনে।

মুস্তাফা জামান আব্বাসীর বাবা কিংবদন্তি লোক সঙ্গীতশিল্পী ও সুরকার আব্বাসউদ্দীন আহমদ। তার চাচা আব্দুল করিম ছিলেন পল্লীগীতি ও ভাওয়াইয়া–ভাটিয়ালির জনপ্রিয় শিল্পী। বড় ভাই মুস্তাফা কামাল সাবেক প্রধান বিচারপতি। মুস্তাফা কামালের মেয়ে নাশিদ কামালও একজন বরেণ্য শিল্পী। বোন ফেরদৌসী রহমানও দেশের প্রথিতযশা বহুমাত্রিক প্রতিভাবান সংগীতজ্ঞ। একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য এ সংগীতশিল্পীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সংগীতাঙ্গনে।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

Advertisement

জনপ্রিয়