Apan Desh | আপন দেশ

নোয়াখালীতে পানি নামতে শুরু করলেও কমেনি দুর্ভোগ

নোয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৯:৪৭, ১২ জুলাই ২০২৫

নোয়াখালীতে পানি নামতে শুরু করলেও কমেনি দুর্ভোগ

ছবি : আপন দেশ

নোয়াখালীতে টানা চারদিনের ভারী বৃষ্টিপাতের পর সূর্যের দেখা মিলেছে। নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায় পানি বাড়েনি। তবে এখনো জেলা শহর মাইজদীর প্রধান সড়ক ছাড়া বেশির ভাগ সড়ক পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। অনেক বাসাবাড়িও জলমগ্ন। পানি ধীরগতিতে নামায় জনদুর্ভোগ তীব্র আকার ধারণ করেছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলার ছয়টি উপজেলার ৫৭টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৭০টি পরিবারের প্রায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৫০৩ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। কবিরহাট ও সুবর্ণচর উপজেলায় আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৫টি বসতঘর। সুবর্ণচরে একটি বসতঘর সম্পূর্ণভাবে ধসে পড়েছে।

সরেজমিনে মাইজদীর লক্ষ্মীনারায়ণপুর, সেন্ট্রাল রোড, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, রেললাইন-সংলগ্ন এলাকা, মোক্তার মসজিদ, জেলা জজ আদালত সড়ক, ছাবিম মিয়া সড়ক, হাকিম কোয়ার্টার, আল ফারুক একাডেমি ও মেথর পল্লি এলাকাগুলো ঘুরে দেখা গেছে- এসব এলাকায় এখনো রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে রয়েছে। আশপাশের অনেক বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকে পড়েছে। টানা বৃষ্টির বিরতিতে মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেলেও জলাবদ্ধতা ও বন্যা পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি।

জেলা শহরের বাসিন্দা শাহ আলম বলেন, বন্যা ও জলাবদ্ধতায় নোয়াখালীর মানুষ চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ফিরেও কেউ পাচ্ছেন না নিরাপদ ঠাঁই। ঘরবাড়ি, রান্নাঘর, পুকুর- সবই পানিতে তলিয়ে আছে। কারও কারও ঠাঁই হয়েছে শুকনো জায়গায়, তবে অনেকেই এখনো ভেঙে পড়া ঘরে কাটাচ্ছেন মানবেতর জীবন। সূর্যের দেখা মিললেও দুর্ভোগ কাটেনি, বরং পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই।

জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, পাঁচটি উপজেলায় ৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ১ হাজার ৮৫০ জন মানুষ এবং ১৭১টি গবাদি পশু। দুর্গতদের চিকিৎসায় ৫১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে, যার মধ্যে ২৯টি কাজ শুরু করেছে। বন্যার ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা আগের দিনের তুলনায় কম। বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আরও কমতে পারে।

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে জনদুর্ভোগ বেড়েছে। তবে আমরা দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পানি চলাচলের পথগুলো সচল করতে কাজ করছেন। উপজেলাগুলোতে নির্বাহী অফিসারগণ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং বৃষ্টি না হলে জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়