
সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার দেশে প্রত্যাবর্তন ইস্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সরকারের অন্তর্বর্তী পর্যায়ের কেউ কেউ সুকৌশলে তারেক রহমানের দেশে ফেরার পথকে অনিরাপদ করে তুলতে চাইছে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ড. খলিলের অহেতুক প্রলাপে প্রতীয়মান হচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকারের কেউ কেউ সুকৌশলে বাংলাদেশের জনপ্রিয় নেতা তারেক রহমানের দেশে নিরাপদ প্রত্যাবর্তনকে অনিরাপদ করে তুলতে চায়। অবিলম্বে তাকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে দেশে-বিদেশে তার অবস্থান সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য দেশের জনগণের সামনে হাজির করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি এমন একজন ব্যক্তিকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বানিয়েছেন দেশের জন্য যার কোনো দৃশ্যমান অবদান নেই। তিনি তো বাংলাদেশের জন্য নন, বিদেশের জন্য কাজ করবেন। মানবিক করিডোর বা চ্যানেল নামে বাংলাদেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন>>>ইশরাকের আন্দোলন ভিন্ন মোড নিচ্ছে
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে রিজভী বলেন, খলিলুর রহমান যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত জীবন প্রসঙ্গটি যেভাবে উপস্থাপন করেছেন তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিমূলক। ‘ধান ভানতে শিবের গীত’ গাওয়ার মতো ড. খলিলুর রহমান বলেন, কেবল আমি আমেরিকায় থেকেছি বলে আমাকে যদি বলা হয় আপনি বিদেশি নাগরিক, তাহলে কাল তারেক রহমান সাহেবকেও সে কথা বলতে হবে। আমাকে ঢিল নিক্ষেপ করলে সে ঢিল কিন্তু অন্যের ওপর গিয়েও পড়তে পারে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে এহেন বক্তব্য নিঃসন্দেহে আত্মগরিমার প্রদর্শন এবং দুরভিসন্ধিমূলক। খলিলুর রহমান তারেক রহমানের রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা বিনষ্ট, জনসাধারণকে বিভ্রান্ত ও মানুষের মাঝে তার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার হীন উদ্দেশ্যে নিয়েই এ বক্তব্য রেখেছেন, যা দুর্ভাগ্যজনক বিভ্রান্তিকর।
তিনি বলেন, তারেক রহমান তার জীবনের নিরাপত্তাহীনতার কারণে দেশে ফিরতে পারেননি। ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনের অধীনে পর্যটক, কর্মক্ষেত্র, ছাত্র, বিনিয়োগকারী এবং পরিবার বা শরণার্থী ভিসাসহ ভিসা বিভাগের অধীনে একজন বিদেশি নাগরিকের জন্য যুক্তরাজ্যে স্বল্প সময়ের (ছয় মাস), বর্ধিত সময়ের জন্য বা অনির্দিষ্টকালের জন্য বসবাস করা আইনত বৈধ।
রিজভী বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বারবার স্পষ্ট করে বলেছেন, জনগণের ভোটে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। সমর্থন অব্যাহত রাখার পরও অন্তর্বর্তী সরকারে মনে হচ্ছে এ সমর্থনের গুরুত্ব অনুধাবন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের কেউ কেউ মনে হচ্ছে, বিএনপির সঙ্গে পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করতে চায়।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ফ্যাসিবাদের দেড় দশক ড. খলিল কোথায় ছিলেন? কীভাবে ছিলেন? কোন দেশে ছিলেন? বিদেশে তার স্ট্যাটাস কি ছিল? ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে তার ভূমিকা কি ছিল? অবশ্যই এসব প্রশ্নের জবাব জনগণকে জানাতে হবে। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, রাষ্ট্র নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগ নেই।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।