Apan Desh | আপন দেশ

‘উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে মাংস-ডিমের দাম কমানো হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:০৩, ২২ অক্টোবর ২০২৫

‘উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে মাংস-ডিমের দাম কমানো হবে’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

বিশ্বের অনেক দেশ বাংলাদেশে স্বল্পমূল্যে গরুর মাংস রফতানির প্রস্তাব দিয়ে আসছে। কিন্তু মাংস আমদানি করলে দেশের খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ কারণে সরকার এ বিষয়ে অত্যন্ত সতর্কভাবে অগ্রসর হচ্ছে। এ তথ্য জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

তিনি বলেন, আমরা মাংস আমদানি করে দেশের ক্ষতি করতে চাই না। আমরা কেন মাংস আমদানি করবো? বরং দেশেই উৎপাদন খরচ কমিয়ে নিজেদের চাহিদা পূরণে কাজ করবো। তাই আমদানি নয়, উৎপাদন ব্যয় হ্রাসের মাধ্যমে আমরা মাংস, ডিমের  দাম কমানোর পথে অগ্রসর হবো।

বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে সাভারে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই)-এর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব  কথা বলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা।

আরও পড়ুন>>>বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় না: আইন উপদেষ্টা

ফরিদা আখতার বলেন, গবেষণার ফলাফল শুধু ইনস্টিটিউট পর্যায়েই সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। গবেষণার বাজেট ৫ কোটি থেকে ৩ কোটিতে নামিয়ে আনা হয়েছে, যা দেশের জন্য বড় ক্ষতি। গবেষণায় অর্থ বরাদ্দ না থাকলে নতুন উদ্ভাবন ও উন্নয়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও এনজিওগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। যাতে করে গবেষণার সুফল মাঠপর্যায়ে পৌঁছে দেয়া যায়। 

তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় প্রাণিসম্পদ খাতে গবেষণার পরিধি বাড়াতে হবে। উন্নত দেশগুলো নিজেদের গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে না এনে উল্টো উন্নয়নশীল দেশগুলোর গবাদিপশুর ওপর দায় চাপাচ্ছে। এটি মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। উন্নত দেশগুলো গাড়িতে জ্বালানি পুড়িয়ে পরিবেশের ক্ষতি করছে। অথচ তারা এসব বন্ধ না করে আমাদের গবাদিপশুকে গ্রিনহাউজ গ্যাস বৃদ্ধির জন্য দায়ী করছে।

প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, যে রোগ প্রাণীর হয় তা মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে। আবার মানুষের রোগও প্রাণীর মধ্যে ছড়াতে পারে। তাই ‘ওয়ান হেলথ’ ধারণাকে গুরুত্বের সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রাণীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে গভীর গবেষণা প্রয়োজন। পাশাপাশি দেশীয় জাতসমূহের সংরক্ষণ ও উন্নয়নেও আমাদের বিশেষ ভাবে নজর দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএলআরআই’র মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক। বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের। 

আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের বলেন, বৃহৎ ক্ষেত্র আছে প্রাণিসম্পদ খাতে যা আমরা উপলব্ধি করি না। প্রাণিসম্পদের উন্নয়নে দুইটি বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া উচিৎ। এক প্রাণীর সুস্থ্যতা ও অন্যটি হলো বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উপরে জোর দেয়া। প্রাণীর সুস্থ্যতার জন্য নিয়মিত ভ্যাকসিনেশন নিশ্চিত করতে হবে। প্রাণীর জন্য নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের খামার পর্যায়ে সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে প্রাণী অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন এটি জবাই করে ফেলা হয়। সেটির মাংস খেয়ে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ কারণে প্রাণীর খাবারের দাম বাড়ার কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে। 

তিনি বলেন, অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে কেনো দম বেশি, অন্যান্য দেশ খাদ্য হিসেবে কি কি জিনিস ব্যবহার করে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন। পাশাপাশি দেশীয় প্রাণীর সংরক্ষণে কাজ করা ও প্রাণীর মানোন্নয়নে কাজ করাও গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণার প্রভাব ও ফলাফল যৌক্তিকভাবে উপস্থাপন করতে পারছি না বলেই গবেষণায় আমরা বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে পারছি না। এ জন্য এ বিষয়ে আরও গুরুত্ব দিতে হবে।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়