Apan Desh | আপন দেশ

প্রবাস কারাগারে জীবন দিয়ে প্রমাণ করতে হলো আব্দুল হামিদ ‘দেশপ্রেমিক’

নিজস্ব প্রতিবেদক 

প্রকাশিত: ১৩:৪৯, ৮ অক্টোবর ২০২৫

প্রবাস কারাগারে জীবন দিয়ে প্রমাণ করতে হলো আব্দুল হামিদ ‘দেশপ্রেমিক’

কোটা সংস্কার আন্দোলনে হত্যার প্রতিবাদে দুবাইতে বিক্ষোভ/ আব্দুল হামিদ

দুবাই কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন জুলাই আন্দোলনের ‘প্রবাসী যোদ্ধা’ চট্টগ্রামের আব্দুল হামিদ। দেশে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও বিদেশের মাটিতে কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি। আব্দুল হামিদ শেষ পর্যন্ত জীবন দিয়েই প্রমাণ করলেন তিনি ‘দেশপ্রেমিক’।

বুধবার (০৮ অক্টোবর) অসুস্থ হয়ে কারাগারেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুর পর সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আন্তর্জাতিক সেলের সহ-সম্পাদক আলাউদ্দিন মোহাম্মদ এ তথ্য জানিয়েছেন।

২০২৪ সালে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়া প্রবাসীদের মধ্যে এখনো ২৫ জন বিভিন্ন কারাগারে আটক রয়েছেন। তাদেরই একজন ছিলেন আব্দুল হামিদ। দীর্ঘদিনের কারাবাস ও শারীরিক জটিলতার কারণে তার মৃত্যুতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এনসিপির ডায়াস্পোরা (প্রবাসী) ইউনিট শুরু থেকেই এসব জেলবন্দীদের মুক্তির দাবিতে কাজ করে আসছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে সংবাদ সম্মেলন, স্মারকলিপি প্রদান ও সর্বশেষ তারিক আদনান মুনের নেতৃত্বে ইউএইতে গিয়ে আইনি সহায়তা কার্যক্রম শুরু করা হয়।

আরও পড়ুন>>>পদত্যাগ করে মাউশির সাবেক ডিজি বললেন ‘তারা অচিরেই ফল ভোগ করবে’

সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জুলাই আন্দোলনের কারাবন্দীদের মুক্ত করতে না পারা অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বড় ব্যর্থতা। তারা অবিলম্বে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন, এ প্রবাসী কারাবন্দীদের মুক্তি ও দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে।

আলাউদ্দিন মোহাম্মদ গত আগস্ট মাসে দুবাইয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে পাঠানো আরব আমিরাতে আটক ২৫ প্রবাসীর মুক্তির আবেদনপত্রটিও পোস্টে করেন।

এনসিপি ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্সের ‍পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বরাবর পাঠানো পত্রে বলা হয়েছে, গত বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশের গণআন্দোলনের সময় সংহতি জানিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে একটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের কারণে এ ২৫ জন প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক দীর্ঘ প্রায় এক বছর ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন বন্দিশালায় আটক রয়েছেন। আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে যে, বাংলাদেশ দূতাবাসের সরবরাহকৃত তথ্যের ভিত্তিতেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। যদিও প্রধান উপদেষ্টার কূটনৈতিক তৎপরতায় প্রায় শতাধিক প্রবাসী ছাড়া পেয়েছেন, এখনো এ অভিযোগ পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হয়নি।

এতে আরও বলা হয়েছে, আমরা মনে করি, এটি একটি গণতান্ত্রিক দেশের প্রবাসী নাগরিকদের মতপ্রকাশের অধিকার হরণ এবং মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। দেশের নাগরিকদের রক্ষার পরিবর্তে দূতাবাস তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, যা আমাদের সংবিধান, আন্তর্জাতিক আইন এবং কূটনৈতিক দায়িত্বের পরিপন্থী। এ ২৫ জন মানুষ কারাবন্দি থাকায় তাদের পরিবার বাংলাদেশে চরম দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছেন-আর্থিক সংকট, মানসিক দুশ্চিন্তা, সন্তানদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। তাদের অপরাধ শুধুমাত্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতি ভালোবাসা ও সমর্থন জানানো।

তিন দাবি জানিয়ে এনসিপি ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্স জানায়, অনতিবিলম্বে নিম্নলিখিত তিনটি দাবি বাস্তবায়নে দ্রুত কূটনৈতিক ও আইনি উদ্যোগ গ্রহণ করে আটককৃত ২৫ জন বাংলাদেশিকে মুক্ত করে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

দাবি তিনটি হলো-

১. অবিলম্বে সব অভিযোগ প্রত্যাহার করতে হবে। একটি কনস্যুলার কমিউনিকেশন চ্যানেল স্থাপন করতে হবে।

২. দ্রুত সময়ের মধ্যে কূটনৈতিক ও আইনি উদ্যোগ নিয়ে ২৫ জন বন্দিকে মুক্ত করে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি অভিযোগ প্রত্যাহার করে ভবিষ্যৎ হয়রানি থেকে মুক্তি দিতে হবে।

৩. পাশাপাশি গত জুলাই মাসে যেসব কর্মকর্তা এ ২৫ জন প্রবাসী বাংলাদেশির বিরুদ্ধে দুবাই পুলিশের কাছে অভিযোগ দাখিল করেছেন তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়