
প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশের সে-সব কঠিন বাস্তবতার গল্প আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ঠিকমতো পৌঁছাচ্ছে না। এর ফলে জলবায়ু সংকট মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক তহবিল ও সমর্থন আদায় করা কঠিন হয়ে পড়ছে। এ মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, এ সমস্যার সমাধানে সাংবাদিকদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। গণমাধ্যমকে বাংলাদেশের জলবায়ু সংকটের আসল চিত্র বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে হবে। যা জলবায়ু অর্থায়নের জন্য শক্তিশালী যুক্তি তৈরি করবে।
সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। পিকেএসএফ চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন>>>অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের পরিচালক লিন্টুর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
প্রেসসচিব বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। আমাদের ১৮ কোটি মানুষ সরাসরি জলবায়ু ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সাইক্লোন, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস ও নোনাজলের বিস্তার প্রতিনিয়ত বাড়ছে। কিন্তু আমাদের নিজেদের গল্পগুলো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পৌঁছায় না। বিদেশি গণমাধ্যম মাঝে মাঝে এদেশে টিম পাঠিয়ে প্রতিবেদন করলেও দেশীয়ভাবে প্রস্তুত গল্পগুলো বৈশ্বিক অঙ্গনে জায়গা পায় না।
তিনি উল্লেখ করেন, দেশের ভেতরে সিলেটের পানির সংকট, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লবণাক্ততা, কিংবা ভবদহের জলাবদ্ধতার মতো সমস্যাগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাব। কিন্তু এসব ঘটনা মিডিয়ায় মৌসুমি কভারেজ পেলেও আন্তর্জাতিক আলোচনায় জায়গা করে নিতে পারে না। ভবদহে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে থাকে। মৌসুম শেষে এ বিষয়টি আর সংবাদে থাকে না। অথচ এটি জলবায়ু পরিবর্তনের বড় উদাহরণ। এভাবে হাজারো গল্প রয়েছে, যেগুলো আমাদের সংবাদ কাভারেজের বাইরে থেকে যাচ্ছে।
শফিকুল আলম উল্লেখ করেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও সামাজিক অস্থিতিশীলতার সঙ্গেও এটি জড়িত। তিনি উদাহরণ হিসেবে ডেঙ্গুর বিস্তার, মাতৃস্বাস্থ্য সংকট ও উর্বরতার হার পরিবর্তনের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, আমাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে—সামাজিক টেনশন, স্বাস্থ্যঝুঁকি বা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রয়েছে। কিন্তু এ গল্পগুলো আমরা বাইরে তুলে ধরতে পারি না। ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বড় ধরনের কেস তৈরি হয় না এবং আমরা প্রত্যাশিত ফান্ডিং থেকে বঞ্চিত হই।
প্রেসসচিব সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, জলবায়ু সাংবাদিকতা এখন এক গুরুত্বপূর্ণ শাখা। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাংবাদিক বিল ম্যাককিবেন ও এলিজাবেথ কোলবার্টকে উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাংবাদিকদেরও এ ধরনের গভীর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।