
ফাইল ছবি
প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি কেবল পেশি তৈরি করে না, মস্তিষ্ককেও সুস্থ রাখে। এ কারণে অনেকেই এখন খাবারের তালিকায় প্রোটিনের পরিমাণ বাড়াচ্ছেন। তবে পুষ্টিবিদদের মতে, কিছু সাধারণ ভুলের কারণে অনেকেই এর সঠিক উপকারিতা থেকে বঞ্চিত হন। আসুন জেনে নিই প্রোটিন গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত।
১. পরিমাণ না জেনে আন্দাজে খাওয়া
আপনি যদি শুধু আন্দাজ করে প্রোটিন খান, তবে শরীর তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে না। তাই অন্তত এক সপ্তাহ আপনি কী পরিমাণ প্রোটিন খাচ্ছেন, তার হিসাব রাখুন। খাবারের প্যাকেটের তথ্য দেখুন বা অনলাইনে সার্চ করে বিভিন্ন খাবারের প্রোটিনের পরিমাণ জেনে নিন।
এতে আপনি মজার কিছু তথ্যও জানতে পারবেন। যেমন, সাধারণ দইয়ের চেয়ে গ্রিক দইয়ে প্রোটিন প্রায় দ্বিগুণ থাকে। আধা কাপ কটেজ পনিরে প্রায় ১৪ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। আপনি যদি জানেন কোন খাবারে কী পরিমাণ প্রোটিন আছে, যেমন—মটরশুঁটি বা মাছ, তাহলে আপনার সারাদিনের খাবারের পরিকল্পনা করা অনেক সহজ হবে। তবে যাদের কোনো অসুস্থতা আছে, তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রোটিনের পরিমাণ ঠিক করা উচিত।
২. ব্যায়াম না করে শুধু প্রোটিন গ্রহণ
অনেকেই ভাবেন, শুধু প্রোটিন খেলেই পেশি তৈরি হবে। কিন্তু এটি একদমই ঠিক নয়। প্রোটিন তখনই শরীরে কাজ করে, যখন এর সঙ্গে নিয়মিত ব্যায়াম করা হয়। বিশেষ করে, শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম বা "স্ট্রেন্থ ট্রেনিং" খুব জরুরি।
সাধারণত হাঁটা বা সাইকেল চালানোর মতো হালকা ব্যায়ামের পাশাপাশি প্ল্যাঙ্ক করা বা ভারোত্তোলনের মতো ব্যায়ামগুলো চালিয়ে যেতে পারেন। ব্যায়াম করলে প্রোটিন সঠিকভাবে শরীরে শোষিত হয় এবং পেশি গঠনে সাহায্য করে।
৩. অন্যান্য পুষ্টির কথা ভুলে যাওয়া
প্রোটিনের দিকে অতিরিক্ত মনোযোগ দিতে গিয়ে আমরা অনেক সময় অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির কথা ভুলে যাই। শরীর সুস্থ রাখতে শুধু প্রোটিন যথেষ্ট নয়। এর পাশাপাশি অন্যান্য পুষ্টি উপাদানও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার খাবারের তালিকায় রঙিন ফল ও সবজি রাখুন। স্বাস্থ্যকর চর্বি, যেমন—বাদাম বা অ্যাভোকাডো, এবং আঁশযুক্ত শস্য ও নানা ধরনের ডাল নিয়মিত খান। শুধু মাংসের ওপর নির্ভর না করে প্রোটিনের উৎস হিসেবে মাছ, ডাল, ডিম বা পনিরের মতো বিভিন্ন ধরনের খাবার যোগ করুন। এতে শরীর সব ধরনের পুষ্টি পাবে।
৪. উদ্ভিজ্জ প্রোটিনকে গুরুত্ব না দেয়া
অনেকের ধারণা, নিরামিষ বা ভেগান খাবারে যথেষ্ট প্রোটিন পাওয়া যায় না। এই ধারণাটি সঠিক নয়। ডাল, বিভিন্ন রকম শস্য, সবজি, বাদাম ও বীজ প্রোটিনের চমৎকার উৎস।
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এসব খাবার সহজেই যোগ করতে পারেন। যেমন, সকালের নাশতায় ওটস খেতে পারেন। দুপুর ও রাতের খাবারে ডাল বা শস্যের সঙ্গে সবজি রাখুন। বিকেলের নাশতা হিসেবে বাদাম, বীজ বা ফল খাওয়া যেতে পারে। ফলের সঙ্গে পিনাট বাটার বা গাজরের সঙ্গে (chickpea dip) খেলে প্রোটিনের চাহিদাও পূরণ হবে।
৫. সয়া জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা
সয়া নিয়ে অনেকের মধ্যে কিছু ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। কিন্তু সয়া প্রোটিনের একটি দারুণ উৎস ও এটি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। সয়াবিন বা টফুর মতো খাবার নিশ্চিন্তে খেতে পারেন।
তবে খেয়াল রাখতে হবে, অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত সয়া-ভিত্তিক খাবার, যেমন—কৃত্রিম মাংস বা কিছু প্রোটিন বার, এড়িয়ে চলাই ভালো। প্রাকৃতিক সয়া আপনার প্রোটিনের চাহিদা পূরণে সাহায্য করতে পারে।
আপন দেশ/এমবি