
ফাইল ছবি
গত ৫ আগস্টের পর দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে সরকারের সঙ্গে পরিবর্তন আসে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি)। খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন ১৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয়ার পর কারসাজি রোধে তৎপর হলেও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছে।
নতুন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর নানা অনিয়মে হাজার কোটি টাকা জরিমানা করলেও বাজারে বিনিয়োগ নেই বললেই চলে। প্রতিদিনই লেনদেন তলানিতে যাচ্ছে। শেয়ারবাজার মূলধন সংগ্রহের জন্য হলেও নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর গত নয় মাসে একটিও আইপিও বাজারে আসেনি। যা বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্টদের হতাশ করেছে। বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে হলে ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্তি এখন সময়ে দাবি বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ডিএসই সূত্রে জানা যায়, নতুন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার দিন অর্থাৎ ১৮ আগস্ট ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৭৭৮ পয়েন্টে অবস্থান করছিল। সর্বশেষ বুধবার (০৪ জুন) লেনদেন শেষে এ সূচক দাঁড়িয়েছে ৪৭০৯ পয়েন্টে অর্থাৎ খন্দকার রাশেদ মাকসুদ দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ১০৬৯ পয়েন্ট। যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা সংকট বাড়াচ্ছে।
শুধু তাই নয়, বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর গত নয় মাসে একটা ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত না হওয়া বা কোম্পানিকে আনার কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান না হওয়াও বিনিয়োগকারীদের দুশ্চিন্তার কারণ।
বিনিয়োগকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ শেয়ারবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি আ ন ম আতাউল্লাহ নাঈম বলেন, নয় মাসে একটা ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি শেয়ারবাজারে না আসা বা আনার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান না হওয়া হতাশাজনক। কারণ বিগত ১৫ বছরে দুয়েকটি স্টক ছাড়া সব দুর্বল কোম্পানি শেয়ারবাজারে আনা হয়েছিল। তাই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বিনিয়োগকারীর প্রত্যাশা ছিল, সার্বিক দিক বিবেচনা করে কমিশন দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।
তিনি আরও বলেন, দেশসেরা কোম্পানি ও মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানি যারা এ দেশে বিনিয়োগ করে শত শত কোটি টাকা দেশ থেকে নিয়ে যাচ্ছে, তাদেরকে শেয়ারবাজার আনার কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। এতে করে ভালো শেয়ার ও তারল্যের যোগান বাড়বে।
এক বছরের মধ্যে আইপিও না আসা দুঃখজনক। তবে বিগত সময়ে বিশেষ মহলের স্বার্থ হাসিলের জন্য আইপিও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে আমরা দেখতে পেয়েছি, ওই কোম্পানিগুলো শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার কিছুদিন পর থেকে অফার প্রাইসের (প্রস্তাবিত মূল্য) নিচে চলে গেছে। এর মধ্যে কয়েকটি কোম্পানি ওটিসিতে চলে গেছে, যা বাাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বলে মনে করেন ক্যাপিটাল মার্কেট জানালিস্ট ফোরামের সভাপতি এস এম গোলাম সামদানী ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, বর্তমান কমিশনের দায়িত্ব নেয়ার পর গত নয় মাসে একটিও আইপিও আসেনি। শুধু তাই নয়, আগের কমিশন বিদায় নেয়ার আগেও প্রায় ছয় মাস ধরে কোনো আইপিও ছিল না। এটা বাজারের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।
বাজারে আইপিও আসা অবশ্যই দরকার বলে মনে করেন শেয়ারবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল আমিন।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।