Apan Desh | আপন দেশ

রাবির প্রশাসনিক ভবনসহ ১২ স্থাপনার নাম পরিবর্তন

রাবি প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ১৪:২৪, ২৩ মে ২০২৫

রাবির প্রশাসনিক ভবনসহ ১২ স্থাপনার নাম পরিবর্তন

ছবি : আপন দেশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ৫৩৯ তম সিন্ডিকেট সভায় দুইটি প্রশাসনিক ভবনসহ ১২টি স্থাপনার পুনঃনামকরণ করা হয়েছে। শুক্রবার (২৩ মে)  বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফখারুল ইসলাম মাসউদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুনঃনামকরণকৃত স্থাপনাগুলো হলো: 
সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবন ও শহীদ মনসুর আলী প্রশাসন ভবনকে প্রশাসন ভবন-১ ও প্রশাসন ভবন-২, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলকে বিজয়-২৪ হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলকে জুলাই-৩৬ হল, শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সিনেট ভবনকে সিনেট ভবন, শেখ কামাল স্টেডিয়ামকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়াম, ড. কুদরত-ই-খুদা অ্যাকাডেমিক ভবন ও ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া অ্যাকাডেমিক ভবনের নাম বদলে জাবির ইবনে হাইয়ান ও জামাল নজরুল ভবন, কৃষি অনুষদ ভবনের নাম কৃষি ভবন করা হয়েছে।

এছাড়াও শেখ রাসেল মডেল স্কুলের নাম পরিবর্তন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মডেল স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেইটের ও বিনোদপুর গেইটের নাম বদলে শহীদ সাকিব আঞ্জুম গেইট ও শহীদ আলী রায়হান গেইট করা হয়েছে।

এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বঙ্গবন্ধু হল, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, শেখ রাসেল মডেল স্কুল, শেখ কামাল স্টেডিয়াম, নির্মাণাধীন এএইচএম কামারুজ্জামান ও শেখ হাসিনা হলেরও নামফলক ভেঙে দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। সেদিনই তারা এসব স্থাপনার নাম পরিবর্তনের দাবি জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আবু রায়হান বলেন, স্থাপনাগুলোর নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত শুধুই প্রশাসনিক পরিবর্তন নয়, এটি ২৪ এর ছাত্র আন্দোলনের প্রতিফলন। শিক্ষাঙ্গনকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ও গণতান্ত্রিক হওয়া উচিত। জুলাই আন্দোলন আমাদের সামনে সে দাবি এনেছিল। পুরনো নামগুলো ছিল একটি নির্দিষ্ট দলীয় ইতিহাসের প্রতিনিধিত্বকারী, যেখানে বহু শিক্ষার্থীর মতামত উপেক্ষিত ছিল। এখনকার এ পরিবর্তন, বিশেষ করে শহীদ সাকিব আঞ্জুম ও শহীদ আলী রায়হানের নামে গেইটের নামকরণের মাধ্যমে তাদের আত্মত্যাগকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নিশাত আরা বলেন, আমরা এ নাম পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে নতুন এক মূল্যবোধের যাত্রা শুরু হতে দেখছি, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় কোনো একক দলের নয়। ‘বিজয়-২৪ হল’ বা ‘জুলাই-৩৬ হল’ এর মতো নামকরণ আমাদের ২৪ এর আন্দোলনের ইতিহাসকে সংরক্ষণ করে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সচেতন করবে।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ভবনের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে স্টুডেন্টদের মতামত আগে নেয়ার দরকার ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেইট, কাজলা গেইটসহ কয়েকটি ভবনের নাম পরিবর্তন বিষয়ে তাদের আরেকটু ভাবা উচিত। আমরা শিক্ষার্থীরা এ গেইট দুটিকে বিনোদপুর ও কাজলা নামেই চিনি। এছাড়াও ড. ওয়াজেদ মিয়া এবং ড. কুদরত-ই-খুদা ভবনের নাম পরিবর্তন অযৌক্তিক। তাদের তো কোনো দোষ ছিল না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেন, ভবনগুলোর নাম পরিবর্তনের জন্য আমাদের কাছে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে নির্দেশনা ছিল। সে অনুযায়ী সিন্ডিকেট সভায় নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নির্মাণাধীন নতুন দুইটি হলের বাজেট এবং প্রক্রিয়াধীন কিছু জটিলতার জন্য এ মূহুর্তে নাম পরিবর্তন করা হয়নি। নির্মাণ কার্য শেষ হলে আমরা এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবো।

মেয়েদের হলের নাম 'জুলাই ৩৬' রাখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবে আমাদের মেয়েদের অনেক বড় অবদান ছিল। তাদের অবদানকে সম্মান জানিয়ে একটা ছেলেদের এবং একটা মেয়েদের হলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, সিন্ডিকেট কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নামগুলো নির্বাচন করা হয়েছে। আমরা যে নামই নির্ধারণ করি না কেন, এতে সমলোচনা আসবেই। নির্মাণাধীন নতুন দুইটি হলের নাম পরিবর্তন করতে হলে যাবতীয় নথি পরিবর্তন করতে হবে। নির্মাণকাজ শেষ হলে আমরা এ দুটি হলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবো।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়