
ফাইল ছবি
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ৯ জন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সিন্ডিকেট। এছাড়া ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ২৮৯ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। হামলার সঙ্গে আরও ১০ জন শিক্ষকের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তদন্ত করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য একটি স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় দীর্ঘ আলোচনা শেষে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গতরাত সাড়ে তিনটায় সভা শেষে উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে হামলায় সংশ্লিষ্ট ৯ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অধিকতর তদন্তের জন্য স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে। বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবির, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ইস্রাফিল আহমেদ রঙ্গন, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী ইকবাল, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আ.স.ম. ফিরোজ-উল-হাসান, ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হোসনে আরা, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক নাজমুল হোসেন তালুকদার এবং পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের অধ্যাপক তাজউদ্দীন শিকদার।
এছাড়া, আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় আরও ১০ শিক্ষকের সংশ্লিষ্টতা তদন্ত করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের প্রভাষক কানন কুমার সেন, ইন্সটিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) সহকারী অধ্যাপক পলাশ সাহা, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শফি মোহাম্মদ তারেক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জহিরুল ইসলাম খোন্দকার, অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মনির উদ্দিন শিকদার, লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ছায়েদুর রহমান, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ার খসরু পারভেজ, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মহিবুর রৌফ শৈবাল এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ এ মামুন।
অন্যদিকে, আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে শনাক্ত হওয়া ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ২৮৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। হামলায় জড়িতদের মধ্যে যাদের ছাত্রত্ব শেষ হয়ে গেছে, তাদের সনদপত্র স্থগিত করা হবে। এছাড়া স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পরীক্ষা দেয়া শিক্ষার্থীদের ফলাফল স্থগিত রাখা বা বিশেষ ক্ষেত্রে সনদপত্র স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।
এছাড়া, হামলার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার দায়ে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম এবং সাবেক রেজিস্ট্রার আবু হাসানের পেনশন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট। তদন্ত কার্যক্রম ও বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের পেনশন স্থগিত থাকবে।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন কর্মকর্তা ও একজন কর্মচারীকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন নাহিদুর রহমান খান ও রাজীব চক্রবর্তী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের তৎকালীন হল এটেনডেন্ট মুহসিনকেও বরখাস্ত করা হয়েছে।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।