ফাইল ছবি
দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে ‘বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’। খসে পড়েছে ভবনের পলেস্তারা। গ্রন্থাগারটিতে লাইব্রেরিয়ান নেই প্রায় দুই বছর। পত্রিকা সরবরাহও বন্ধ আঝে প্রায় চার বছর। এক বছর আগে ভেঙে গেছে দুটি জানালা। টিউবওয়েলটিও দুই বছর ধরে নষ্ট।
এ ছাড়া মোটর ঠিক থাকলেও টিউবওয়েল এবং ভূগর্ভস্থ পাইপ ঠিক না থাকায় গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের ট্যাংকে দুই বছর ধরে পানি ওঠানো যাচ্ছে না। ফলে বাথরুমসহ পানি ব্যবহারে সমস্যা হচ্ছে। এর মধ্যে টিউবওয়েলের ভূগর্ভস্থ পাইপ মাটির ভেতরে নিচিহ্ন হয়ে গেছে। বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের বসতভিটায় নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ চত্বরে বসার টাইলসও অনেক জায়গায় উঠে গেছে।
এমন অনেক সমস্যায় ভুগছে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। এদিকে, স্মৃতিস্তম্ভের চারপাশে সীমানা প্রাচীর এবং বিশ্রামাগার নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর। অন্যদিকে, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের নামে প্রতিষ্ঠিত স্কুল ও কলেজটি জাতীয়করণসহ শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের দাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। পাশাপাশি দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই রয়েছে শ্রেণিকক্ষ সংকট। এ লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ১৪ আগস্ট স্কুল পর্যায়ে একতলা ভবন নির্মাণ শুরু হলেও সাড়ে তিন বছরেও তা শেষ হয়নি। সবেমাত্র পিলার ঢালাই পর্যন্ত হয়েছে। তবে কলেজের একতলা ভবনটিতে ক্লাস চালু হয়েছে।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহিন শেখ বলে, সাড়ে তিন বছরেও নতুন ভবনের কাজ শেষ না হওয়ায় একচালা টিনের ঘরে আমাদের ক্লাস করতে সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত ভবনের কাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।
এলাকাবাসী জানান, ২০১৯ সালে যখন করোনা ভাইরাস শুরু হয়েছে; তখন থেকেই নূর মোহাম্মদ গ্রন্থাগারে দৈনিক পত্রিকা সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এখানে দুটি বাংলা ও একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা চালু ছিল।
গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়ক ইউনুস শেখ বলেন, পত্রিকা বন্ধসহ অন্যান্য বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরাফাতুজ্জামান ও রুমি খানম জানান, কলেজে একটি করে টিনশেডের ঘর ও একতলা ভবন রয়েছে। ফলে তাদের শ্রেণিকক্ষের সংকট রয়েছে। এ ছাড়া ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ না থাকায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্লাসসহ ডিজিটাল জ্ঞান অর্জনে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হচ্ছে।
কলেজের বাংলা বিষয়ের প্রভাষক আল হেলাল ও সহকারী গ্রন্থাগারিক মাসুমা জামায়েল রাফিকা ইতি বলেন, আমাদের দাবি অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ স্কুল এবং কলেজটি জাতীয়করণ করা হোক।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস বলেন, আমি যখন জেলা পরিষদের প্রশাসক ছিলাম; তখন বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর, স্মৃতিস্তম্ভসহ নূর মোহাম্মদ নগরে অনেক ধরনের উন্নয়ন কাজ করেছি। এরপর গত মেয়াদে চেয়ারম্যান ছিলাম না। বর্তমানে আবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। ভবন সংস্কারের অভাব, পত্রিকা সরবরাহ বন্ধ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের বাড়ির স্মৃতিস্তম্ভে সীমানা প্রাচীর না থাকাসহ বিভিন্ন সংকটের কথা শুনেছি। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে দ্রুত বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, রোববার বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের জন্মদিন। ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নূর মোহাম্মদ। তার বাবা মোহাম্মদ আমানত শেখ ও মা জেন্নাতুন্নেছা, মতান্তরে জেন্নাতা খানম।
আপন দেশ/আরএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































