Apan Desh | আপন দেশ

ঐকমত্যের তালিকা আজই পাবে সব রাজনৈতিক দল: আলী রীয়াজ

নিজস্ব প্রতিবদেক

প্রকাশিত: ১৬:৩৩, ৩০ জুলাই ২০২৫

ঐকমত্যের তালিকা আজই পাবে সব রাজনৈতিক দল: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ।

রাষ্ট্রীয় কাঠামো সংস্কারের ১২টি প্রস্তাবে একমত হয়েছে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলোর তালিকা আজ সব রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হবে। এ তথ্য জানিয়েছেন ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ।

বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কমিশনের বৈঠকের বিরতিতে এ কথা জানান তিনি।

তিনি বলেন, যেসব বিষয়ে ঐকমত হয়েছে, সে সিদ্ধান্তগুলো আগামীকালের মধ্যেই জানানো হবে। নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারিত করার বিষয়ে সকল দলই একমত হয়েছে।

এদিকে এখনও ৮টি মৌলিক বিষয়ে ভিন্নমত রয়ে গেছে। নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠনের দুই বছরের মধ্যে এসব সংস্কার বাস্তবায়নের প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন। সংস্কার প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৬টি সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। তাদের দেয়া প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে জাতীয় ঐকমত গড়তে গঠন করা হয় ঐকমত্য কমিশন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে এ কমিশন। মৌলিক সংস্কারের ২০টি বিষয়ের মধ্যে সংবিধান সংস্কার, নির্বাচন ব্যবস্থা পুনর্গঠন, স্বাধীন বিচার বিভাগ গঠনসহ ১২টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একমত হয়েছে দলগুলো।

বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি একাধিক মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হতে পারছেন। তবে নতুন প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এক ব্যক্তি জীবনে সর্বোচ্চ ১০ বছরের বেশ প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিজিটিং ফেলো অধ্যাপক মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, বেশকিছু জায়গায় সাংবিধানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্বে কিছুটা চেক অ্যান্ড ব্যালান্স তৈরির সম্ভাবনা দেখছি, যা নিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনে নতুন প্রস্তাব আনা হয়েছে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালুর বিষয়েও একমত হয়েছে।

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তনে ঐকমত্য হয়েছে। এখন সংসদ সদস্যরা দলীয় নির্দেশনার বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারেন না। কিন্তু নতুন প্রস্তাব অনুসারে, অর্থবিল ও আস্থা ভোট ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবেন।

এছাড়াও বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপন এবং নাগরিক সুবিচার নিশ্চিত করার জন্য উপজেলা পর্যায়ে পর্যায়ক্রমে অধস্তন আদালত স্থাপনেও একমত হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো।

পাশাপাশি, প্রধান বিচারপতির নিয়োগ এবং ইসি গঠন পদ্ধতি এবং পুলিশ বাহিনীর পেশাদারিত্ব বাড়াতে একটি নতুন ‘স্বাধীন পুলিশ কমিশন’ গঠন করার প্রস্তাবও রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন পেয়েছে।

ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘কমিশনের প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন আছে। আমরা এটাকে বিবেচনায় নিয়েছি এবং সে অনুযায়ী তাদের যে সংশোধনী বা পরামর্শ আছে সেগুলো ইনক্লুড করে আরেকবার উপস্থাপন করে দেখতে চাই।’

এদিকে, সংবিধানের উচ্চকক্ষ গঠন এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ পদ্ধতি, রাষ্ট্রের মূলনীতিসহ বেশকিছু বিষয়ে এখনও ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। এসব বিষয়ে আলোচনা চলছে।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়