বৃষ্টি পানিতে জমিতেই ভাসছে কৃষকের স্বপ্নের ফসল

জ্যৈষ্ঠ মাসের অতিবৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চলের পাকা-আধা পাকা বোরো ধান তলিয়ে গেছে। এতে দিশেহারা বগুড়ার ধুনট উপজেলা কৃষকরা। সোনার ফসল বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চোখে-মুখে হতাশা আর চরম দুশ্চিন্তায় এ উপজেলার কৃষকরা।

অতিমাত্রায় বৃষ্টির কারণে জমিতেই ভাসছে কৃষকের স্বপ্নের সোনালি পাকা ধান। এসব পানিতে তলিয়ে পচে নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে চাহিদা মতো মিলছে না ধান কাটার শ্রমিক। ফলে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

সরেজমিনে ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টিতে মাঠে পাকা ধান মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। অনেক জমিতে কেটে রাখা ধান পানিতে ডুবে গেছে। এতে ধানের সঙ্গে ডুবছে কৃষকের স্বপ্নও। কেউ হাঁটু পানিতে নেমে ধান কাটছে। আবার কেউ কাটা ধান উঁচু স্থানে তুলছে। আবার কেউ কাটা ধানগুলো পানিতে ভাসমান অবস্থায় ছড়িয়ে থাকা একত্র করছে।

বৃষ্টির মধ্যে অনেক কৃষক আধা পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন। এখন ধান কাটার মৌসুম শেষের দিকে। তারপরও অনেক কৃষক ক্ষেতের ধান ঘরে তুলতে পারেননি। আর দুই-এক সপ্তাহ সময় পেলে ধান কাটা মাড়াই করে ঘরে তুলতে পারতেন।

আরওপড়ুন<<>>কালীগঞ্জে জনপ্রিয় হচ্ছে বস্তায় আদা চাষ

ক্ষতিগ্রস্থরা কৃষকরা জানান, একদিকে শ্রমিক সংকট, অন্যদিকে বৈরী আবহাওয়া। দুয়ে মিলে যেন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষেতে কেটে রাখা ধানও বৃষ্টির পানিতে ভাসছে। অন্যদিকে, কাটা ধান মাড়াইয়ের পর ভেজা ধান শুকানো নিয়েও রয়েছে দুশ্চিন্তা। বৃষ্টির কারণে বাড়ির উঠানেও কাঁদা হয়ে আছে। সড়কেও ধান শুকাতে পারছেন না তারা।

কৃষকরা আরও জানান, বৃষ্টির কারণে নুয়ে পড়া ধান কাটতে কষ্ট হচ্ছে। আবার জমিতে পানি থাকায় ধার কাটার শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ধান কাটতে যত না কষ্ট তার চেয়ে বেশি কষ্ট উঁচু স্থানে তুলতে। ফলে ধানের ফলন এবং দাম ভালো হলেও হাসি নেই তাদের মুখে।

ধুনট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নুর নাহার বলেন, ধুনটে ১৬ হাজার ৭৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। ইতোমধ্যে মাঠের প্রায় ৯২ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে জ্যৈষ্ঠ মাসের অতিবৃষ্টিতে সামান্য পরিমাণ জমির ধানক্ষেতে পানি জমেছে। তবে যেসব ক্ষেতে ধান নুয়ে পড়েছে, সেসব ক্ষেতের ধান দ্রুত কাটার জন্য আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। আমরা সব সময় কৃষকদের পাশে আছি।

আপন দেশ/এমএইচ